দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনঃ জেলাব্যাপী উন্নয়নের ইমেজে সুনামগঞ্জ-৩-এ এমএ মান্নান এগিয়ে

সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ  নির্বাচনের আর বাকি ১ দিন। অথচ সুনামগঞ্জ-৩ এর ভোটারদের মধ্যে নেই কোন উত্তাপ। যেন ভাবলেশহীন। সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তেমন আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন একজন। তিনি হচ্ছেন নৌকার মাঝি পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। অন্য প্রার্থীরা তুলনামূলক কিছুটা দূর্বল।
জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনে প্রার্থী হয়েছেন মোট ৪ জন। এরমধ্যে জগন্নাথপুর উপজেলায় প্রার্থী রয়েছেন ৩ জন। শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ১ জন। এ উপজেলার একমাত্র হেভিওয়েট প্রার্থী পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। টানা ১৫ বছর জাতীয় সংসদে এ এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন তিনি। সুনামগঞ্জের কৃতিসন্তান এমএ মান্নান এ আসনে এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে জগন্নাথপুর ও শান্তিগন্জ্ঞের চিত্র পাল্টে যায়। এ দুই উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর হাতের পরশে, পুরো সুনামগঞ্জ জেলায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে।
উন্নয়নের বরপুত্র হিসেবে এমএ মান্নানের প্রতি দলমত নির্বিশেষে এ নির্বাচনী এলাকার মানুষের আলাদা একটি সমর্থন রয়েছে। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনি অনেকটা টেনশন মুক্ত রয়েছেন। বৃহৎ দল বিএনপি ও জামায়াত নির্বাচনে না আসায় নির্বাচনের প্রকৃত জৌলুশ ও উৎসবমূখর পরিবেশ তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচনের আর মাত্র ১ দিন বাকি। কিন্তু জগন্নাথপুর পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল পৌর পয়েন্টে শুধুমাত্র নৌকার পোস্টার ছাড়া অন্য কোন প্রার্থীর পোস্টার খুব একটা দেখা যায়নি। সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে নানা মত রয়েছে। ৯১, ৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ এর নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে যেমন নির্বাচনী আমেজ ও উৎসব বিরাজ করছিল বর্তমান অবস্থা তেমনটা নেই। বর্তমান বিএনপিবিহীন নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে জোশটা দেখা যাচ্ছে না।
তবে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করায় নৌকার প্রার্থী, বর্তমান এমপি পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের ব্যক্তিগতভাবে যে জনপ্রিয়তা রয়েছে সে হিসেবে তিনি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।
৩ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর যাবৎ আমি জনগণের সেবা করে যাচ্ছি। জগন্নাথপুর ও শান্তিগন্জ্ঞে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। দু’টি উপজেলা সদর এখন আধুনিক শহরে পরিণত হয়েছে। বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জগন্নাথপুর সদরে একটি মহিলা কলেজ ও মেডিকেল ট্রেনিং সেন্টার করবো, অনেক অসমাপ্ত কাজ রয়েছে, আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার ভোটারগণ আমি এলাকার জন্য কি করেছি তারা সেটা বিবেচনা করে তাদের মূল্যবান রায় দেবেন। আমার বিশ্বাস, বিপুল ভোটে আমি বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ।
অন্যদিকে, জগন্নাথপুর উপজেলা থেকে রয়েছেন জমিয়ত থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত বর্তমানে তৃণমূল বিএনপি’র সোনালী আঁশ মার্কার প্রার্থী মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী এডভোকেট। দলচ্যুত হওয়ায় তার ইমেজে ভাটা পড়েছে। বিগত নির্বাচনে বিএনপি’র মত বড় দলের সমর্থন এবং নিজ দল জমিয়তের সমর্থন ও সহযোগিতা থাকায় বিপুল ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার দল দু’টির সমর্থন তো নেই-ই বরং সাধারণ অনেক ভোটারের তার প্রতি রয়েছে বিরূপ ধারণা।
এ ব্যাপারে মাওলানা শাহিনুর পাশার সাথে আলাপ হলে তিনি বলেন, আমি নিরবে-নিস্তব্ধে জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জের প্রতিটা এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। ভোটারদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পাচ্ছি। তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ হবে। ইনশাআল্লাহ আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো।
জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী, যুক্তরাজ্য জাপার যুগ্ম-সম্পাদক সাংবাদিক তৌফিক আলী মিনার। তিনি বলেন, এ আসন থেকে ইতিপূর্বে জাপা থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী ও তার ভাই অর্থ প্রতিমন্ত্রী ফারুক রশীদ চৌধুরী। এ আসনে লাঙলের বিরাট ভোট ব্যাংক রয়েছে। আমি জয়ের লক্ষ্যে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।
অন্য প্রার্থী হচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)’র মকবুল হোসেন। সম্প্রতি টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে তিনি কতিপয় লোকের পিটুনির শিকার হলে তাকে গণসংযোগে তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না।
নৌকা, লাঙল ও সোনালী আঁশ (পাট) প্রতীকের ৩ প্রার্থীকে নির্বাচনী মাঠে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচারে দেখা গেলেও সাড়া নেই বিজেপি প্রার্থীর।

You might also like