দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনঃ প্রচারণা শুরুর ৪দিন পর প্রার্থিতা পেলেন ১জন
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা শুরুর ৪দিন পর প্রার্থিতা ফিরে পেলেন সিলেট-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম। গত ২১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের এক আদেশে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান এবং তাকে ‘ঈগল’ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। এ নিয়ে সিলেট-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৭ জনে।
ফখরুল ছাড়া অন্য প্রার্থিরা হলেন, আ’লীগের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী আ’লীগ নেতা ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল (ট্রাক), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক (লাঙল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আফরোজ (আম), বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম (মোমবাতি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম (ঈগল) এবং ইসলামী ঐক্যাজোট প্রার্থী মো. মইনুল ইসলাম (মিনার)।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে ১৫ নভেম্বর। এদিন থেকে শুরু হয়েছে নির্বাচনের কাউন্ট ডাউন। আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় এবারের নির্বাচনে নতুন কৌশল অবলম্বন করেছে ক্ষমতাসীন দল আ’লীগ। নির্বাচনে ভোটারদের ‘আশানুরূপ’ উপস্থিতি ঘটাতে নৌকাবঞ্চিত নেতাদের স্বতন্ত্রের মোড়কে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রেখেছে।
এছাড়া সরকারঘোষিত প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে আ’লীগ করেছে আসন ভাগাভাগি। এ ভাগাভাগির কবলে পড়তে পড়তে কোনোমতে রক্ষা পেয়েছেন সিলেট-৩ আসনের নৌকার মাঝি, এ আসনে গত উপ-নির্বাচনে বিজয়ী আ’লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব।
আসনটিতে নৌকা থাকলেও লড়ছেন লাঙ্গলের প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। এছাড়াও রয়েছেন আরেক শক্ত প্রার্থী, আ’লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল। ট্রাক প্রতীকে তিনি নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র হিসেবে। সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে মূলত আলোচনায় রয়েছেন এ ৩ জনই। বাকিরা নেই আলোচনায়।
বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলেট-৩ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আ’লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ভোটের মাঠে হাবিব ও দুলালের তৎপরতা দেখা গেলেও জাপা’র প্রার্থী আতিকুর রহমানর আতিককে মাঠে দেখা যায়নি। মূলতঃ গত বৃহস্পতিবার বড় ভূরিভোজের আয়োজন করে দৃশ্যপটে এসেছেন তিনি। এ ঘটনায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন আতিক।
এদিকে, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বাসিন্দা হাবিব ও আতিক প্রার্থী থাকায় ওই এলাকার ভোটস্রোত এলোমেলো হয়ে যাবার সম্ভাবনাও রয়েছে। অন্যদিকে নিজ এলাকা বালাগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী ঘরানার একক স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. দুলাল। তাঁর অবস্থা নিজ উপজেলায় সুবিধাজনক থাকলেও গত ২বছরে এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব বালাগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়নকাজ করিয়েছেন। ফলে হাবিবের ভোটও সেখানে নেহায়েত কম নয়।
অপরদিকে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সুত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার অন্তর্ভুক্ত মোগলাবাজার থানা এলাকায় ভালো অবস্থান তৈরি করেছেন ডা. দুলাল। তার সাথে আছেন স্থানীয় আ’লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী। মোগলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম শাইস্তাও প্রকাশ্যে ডা. দুলালের পক্ষে কাজ করছেন। এছাড়া আসনটির টানা ৩ বারের এমপি মরহুম মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকরাও নাকি ডা. দুলালের পক্ষে কাজ করছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।
তবে আগামী ৭ জানুয়ারির আগে বলা যাচ্ছে না শেষ হাসি কে হাসবেন। ভোটারদের ভোট পেতে সমান্তরাল কাজ করে যাচ্ছেন হাবিব ও দুলাল।