ধীরগতিতে বিলম্বিত হচ্ছে জগন্নাথপুরে ‘আর্চ সেতু’ নির্মাণ

সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় রাজধানীর হাতিরঝিলের আদলে দৃষ্টিনন্দন ‘আর্চ সেতু’ নির্মাণকাজ ধীরগতিতে চলছে। উপজেলাবাসীর বহুল প্রত্যাশিত সেতুটির কাজ মন্থর গতিতে চলায় দুর্ভোগে আছেন লক্ষাধিক জনসাধারণ। ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১.২৫ মিটার প্রস্থের এই আর্চ সেতুর কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা। কিন্তু স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ গত দেড়বছরে সেতুটির ৫০ ভাগ কাজও সম্পন্ন হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেতুটির নলজুর নদীর দুই তীরে দু’টি অ্যাবাটমেন্টের মধ্যে পূর্বপাড়ের একটি অ্যাবাটমেন্টের নিচ অংশে ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। এর বিপরীতে পশ্চিম তীরের অ্যাবাটমেন্টের কাজ সবেমাত্র শুরু হয়েছে।
জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা জানান, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের এ যাবৎ সবচেয়ে বড় স্থাপনা জগন্নাথপুরে নির্মাণাধীন আর্চ সেতু। সেতুটি বৃহত্তর সিলেট বিভাগের একমাত্র আর্চ সেতু। স্থানীয় এমপি পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জগন্নাথপুর পৌরশহরের নলজুর নদীর ওপর রাজধানীর হাতিরঝিলের আদলে এই দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। পরবর্তীতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে অনুমোদন পায়। ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি ১৩ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে নলজুর নদীর ওপর মধ্যভাগে ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১.২৫ মিটার প্রস্থ এই আর্চ সেতুর অনুমোদন হয়। সেতুর দুপাশে থাকবে ফুটপাত ও লাইটিং। মধ্যস্থানে কোনো পিলার থাকবে না। নৌযান চলাচলের জন্য উপযুক্ত ফাঁক রেখে দু’পাশের দু’টি অ্যাবাটমেন্টের মাধ্যমে ইস্পাত দিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান হবে।
২০২২ সালের ২২ আগস্ট আর্চ সেতুটির কার্যাদেশ হলেও ৮ মাস পরে চলতি বছরের মার্চ মাসে কিশোরগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ‘ভাটিবাংলা এন্টারপ্রাইজ’ এ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটির কাজের উদ্বোধন করেন। এরপর ঢিলেঢালাভাবে সেতুটির কাজ চলছে।
স্টুডেন্ট কেয়ার জগন্নাথপুরের সম্পাদক আমিনুর রহমান হিমেল বলেন, সেতুটির নির্মাণকাজ ধীরগতিতে চলায় জরাজীর্ণ ডাকবাংলো সেতু ও বিকল্প সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এতে পৌরশহরে নিত্যদিন যানজট লেগেই আছে। তাই সেতুটি দ্রুত নির্মাণ করা জরুরি।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার সাইফুল আলম বলেন, ‘‘নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বিদ্যুতের তার ও খুঁটি এবং পুরোনো সেতু অপসারণ করতে সময় লেগেছে। এছাড়া বর্ষাকালে নদীতে পানি আসার কারণে কাজ বাঁধাগ্রস্ত হয়। তাই সেতুর কাজ শেষ করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।’
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. সোহরাব হোসেন বলেন, অনুমোদন পাওয়ার পর চলতি বছরের মার্চ মাসে আর্চ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শুরুতেই কাজ সমাপ্তির সময়সীমা ছিল চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। কিন্তু মাটির কন্ডিশন, বর্ষাকালে নদীতে পানি আসা ও বিদ্যুৎ বিভাগের খুঁটি অপসারণ করতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়। ব্রিজের গার্ডার, আর্চ গার্ডার, লং গার্ডার সম্পন্ন করতে আরও দু’মাস সময় লাগবে।
তিনি জানান, ইতোমধ্যেই সেতুটির প্রায় ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাই আগামী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে সেতুর কাজ সম্পন্ন করার সময়সীমা বর্ধিত হয়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে ফেব্রু“য়ারি মাসে সেতুটি দৃশ্যমান হবে।

You might also like