পাকিস্তান এখন উভয় সংকটে ’’শ্যাম রাখি না কুল রাখি’’: হিনা রব্বানীর বক্তব্যে বিষয়টি পরিস্কার
মতিয়ার চৌধুরী
সত্যবাণী
লন্ডনঃ সম্প্রতি পাক পরাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানীর বক্তব্যে প্রতিয়মান হয় পাকিস্তান এখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। একদিকে দেশের আভ্যন্তরীন কোন্দল অন্য দিকে সম্পর্ক স্পষ্ট করতে চীন এবং আমেরিকার চাপ। তার এমন মন্তব্যে বিষয়টি পরিস্কার । তিনি বলেছেন “আমাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতামূলক মোডে থাকার ইতিহাস রয়েছে। এটা ছাড়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। পাকিস্তানেরও চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ, সহযোগিতামূলক সম্পর্ক থাকার বাস্তবতা রয়েছে এবং যতক্ষণ না চীন হঠাৎ করে সকলের হুমকির উপলব্ধিতে না আসে। এমন মন্তব্য করেছেন পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানী। হঠাৎ করে তার এমন মন্তব্যে প্রতিয়মান হয় পাকিস্তান এখন উভয় সংকটে, ‘’ শাম রাখি না কুল রাখি ‘’ এমনিতে পাকিস্তানের অবস্থা হ-য-র-ল। হিনা রব্বানীর এমন মন্তেব্যে মনে হয় পাকিস্তান উভয় দিক থেকে কঠিণ চাপের মুখে রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক বৈরিতার মধ্যে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি বলেছেন যে তার দেশ দুটি শক্তির মধ্যে পক্ষ বাছাই করতে মোটেই আগ্রহী নয় । উভয় দেশের সাথে সাথে শর্ত রয়েছে পাকিস্তানের তবে এখন পকিস্তান কোন পক্ষ অবলম্বন করবে এমনিটি উঠে এসেছে মিডিয়া রিপোর্টে। হিনা রব্বানী একটি নিউজ আউটলেটকে বলেছেন ইসলামাবাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে সর্বাত্মক বিচ্ছেদের ফল নিয়ে শঙ্কিত,এমন খবর দিয়েছে দ্য নিউজ। ধারনা করা হচ্ছে এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান একটি প্রতিকূল কৌশলগত পছন্দের মুখোমুখি হবে । পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চীনের সাথে অংশীদারিত্বকে বলিদানের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছিলেন “বিশ্বকে দুটি ব্লকে বিভক্ত করার এই ধারণার দ্বারা আমরা অত্যন্ত হুমকির মধ্যে আছি,” তিনি আরো বলেন যে দেশটি এই ডিকপলিং বা বিশ্বকে আরও বিভক্ত করে এমন কিছু নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। “আমাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ, সহযোগিতামূলক মোডে থাকার ইতিহাস রয়েছে। এটা ছাড়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। পাকিস্তানেরও চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ, সহযোগিতামূলক মোডে থাকার বাস্তবতা রয়েছে এবং যতক্ষণ না চীন হঠাৎ করে সকলের হুমকির উপলব্ধিতে না আসে, এটি সর্বদাই ছিল।
এশিয়ায় কৌশলগত প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় ফ্রন্ট লাইন স্টেটগুলো পাকিস্তানকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে। বছরের পর বছর ধরে ভারতের সাথে ওয়াশিংটনের সহযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ায়, পাকিস্তান চীনের কাছাকাছি এসেছে বিশেষ করে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরে (সিপিইসি) বিনিয়োগের পর। এফএটিএফ বৈঠকে যোগ দিতে প্যারিসে পৌঁছেছেন পাকিস্তানের মন্ত্রী হিনা রব্বানি। যাইহোক, ওয়াশিংটন এখনও পাকিস্তানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অংশীদার। যখন বেইজিং সম্প্রতি দেশটির সাথে অর্থনৈতিক বিনিয়োগ এবং সামরিক সহযোগিতা গভীর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই বছরের এপ্রিলে হিনা রব্বানী সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলেন যখন ওয়াশিংটন পোস্ট তার এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের মধ্যে আলোচনার রেকর্ডস্টারড ‘ডিসকর্ড লিকস’ ফাঁস করেছিল। ফাঁস হওয়া নথি অনুসারে, হিনা রব্বানী বলেছিলেন যে পাকিস্তানের পশ্চিমাদের সন্তুষ্ট করা এড়ানো উচিত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব বজায় রাখার ইচ্ছা দীর্ঘমেয়াদী বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ চীনের সাথে তার মূল কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পূর্ণ সুবিধা বিসর্জন দেবে।