পুলিশ কমিশনার বরাবর অভিযোগ পেশ: সৎ পুত্রের অত্যাচারে ষাটোর্ধ বিধবার ভিটাছাড়া

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

সিলেটঃ সৎপুত্রের অত্যাচারে বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন শারীরিকভাবে অসুস্থ ষাটোর্ধ এক বিধবা।মামলা করার সামর্থ না থাকায় স্বামীর দেয়া বসতভিটা ফিরে পেতে তিনি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার বরাবরে দরখাস্ত করেছেন। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার থানার সিলাম মাঝপাড়ার বাসিন্দা প্রয়াত ডা. সৈয়দ ওয়েছ হোসেনের বিধবা স্ত্রী সৈয়দা জমিরুন নেছা ওরফে জমিরুন নাহার গত (২৯ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার সৎপুত্র সৈয়দ রাহেল হোসেনের বিরুদ্ধে এ দরখাস্ত পেশ করেন। পুলিশ কমিশনার অফিস থেকে দরখাস্তটি গ্রহণ করে তদন্তসাপেক্ষ এর প্রতিকারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে বিধবাকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

দরখাস্তে বিধবা বলেছেন, তার স্বামী মৃত্যুর পূর্বে সাফকবালা দলিলের মাধ্যমে মহিলাকে বসতবাড়িতে কিছু ভূ-সম্পত্তি দান করেন। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা শারীরিকভাবে অসুস্থসহ নানা কারণে কিছু ভূমি বিক্রি করে দেন। শেষপর্যন্ত তার মালিকানায় মাত্র ৩ শতক ভূমি রয়েছে। গত ৯ অক্টোবর জমিরুন নেছার গর্ভজাত সন্তান সৈয়দ রায়হান হোসেনের সাথে তুচ্ছ একটি বিষয়ে সৎপুত্র রাহেল হোসেনের ষড়যন্ত্রমুলক কলহের সৃষ্টি করলে এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ধ্বস্তাধ্বস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৎপুত্র রাহেল হোসেন সৎভাই রায়হানসহ তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে মোগলাবাজার থানায় মিথ্যে মামলা দায়ের করে। গ্রেফতার এড়াতে জমিরুন নেছার ছেলে-পুত্রবধুসহ নাতি-নাতনিরা পালিয়ে বেড়াতে থাকার সুযোগে সৎমাকে একা পেয়ে সৎপুত্র রাহেল হোসেন অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও হুমকী-ধমকি দিয়ে বাড়িছাড়া করে। প্রাণের ভয়ে বিধবা বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। এ সুযোগে সৎপুত্র রাহেল বাড়িতে থাকা সৎমায়ের ৩ শতক ভূমি দখল করে নেয়। এ কারণে বিধবা আর বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না।

ফলে বাড়িছাড়া হয়ে বর্তমানে তিনি আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে-বাড়িতে অবস্থান করছেন।
দরখাস্তে তিনি সৎপুত্র রাহেল হোসেনকে একজন দাঙ্গাবাজ, মাদকাসক্ত, জবরদখলদার হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ২০০৩ সালের ৮ আগস্ট সিলেট নগরির বন্দরবাজারে প্রকাশ্যে দিবালোকে ছুরিকাঘাতে জনৈক যুবক হত্যা মামলার আসামী সে। রাহেলের ছবিসহ এই হত্যা ঘটনার সচিত্র প্রতিবেদন পরদিন বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়া তার সৎপুত্র রাহেল ইতিপূর্বে মাদকবিক্রি, চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকীসহ নানা অভিযোগে একাধিক মামলায় কয়েকবার কারাভোগ করেছে। তিনি বলেন, তার ছেলে সৈয়দ রায়হান হোসেন একজন কাওয়ালী শিল্পী এবং নাতনী সৈয়দা লেকমি আক্তার একজন উদীয়মান কন্ঠশিল্পী। সৎপুত্র রাহেল এদের প্রতিভাকে বিনষ্ট করার অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানী করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। দরখাস্তকারী জবরদখলদারের কবল থেকে তার বসতভিটার ভূমি উদ্ধারে পুলিশ প্রশাসনের বলিষ্ট পদক্ষেপ কামনা করেছেন।

You might also like