পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে হবিগঞ্জে আহত ৪০ জন
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ হবিগঞ্জ জেলা সদরে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে ২ সাংবাদিক ও পুলিশসহ ৪০ জন আহত হয়েছেন। ১০ ডিসেম্বর রোববার দুপুর ১২টার দিকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
এই সংঘর্ষে মাইটিভির জেলা প্রতিনিধি নীরঞ্জন গোস্বামী শুভ ও দেশটিভির জেলা প্রতিনিধি আমীর হামজা পুলিশের ছোঁড়া ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। তাদেরকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে নীরঞ্জন গোস্বামী শুভর চোখে গুরুতর আঘাতের কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে। এরপর দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ওসি অজয় চন্দ্র দেবসহ ১৫ পুলিশ ও বিএনপি’র ২৫ নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, বেলা ১১টার দিকে শায়েস্তানগর এলাকার পইল রোডে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি মানববন্ধন শুরু করে। নেতারা বক্তব্য রাখার পর মানববন্ধন শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়। এরপরই একদল নেতাকর্মী আকস্মিক পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। তখন পুলিশ পিছু হঠে ওই এলাকার একটি রড-সিমেন্টের দোকানে আশ্রয় নেয়। এরপর ওই দোকানেও হামলা চালায় বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। তখন তারা কয়েকটি দোকান ও গাড়ি ভাঙচুর করে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।
এদিকে, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা শাখা শহরের শায়েস্তানগরে একটি মানববন্ধন করে। জেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শাম্মী আক্তার শিপার সভাপতিত্বে মানববন্ধন শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়। এরপর একদল দুর্বৃত্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এরা কেউই আমাদের নেতাকর্মী নয়। তবে এই সংঘর্ষে বিএনপি’র প্রায় ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সমকালের জেলা প্রতিনিধি রাসেল চৌধুরী বলেন, রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে জেলা বিএনপির মানববন্ধনের খবর সংগ্রহ করতে যান নীরঞ্জন গোস্বামী ও আমীর হামজা। তখন বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে এই ২ সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হন। তাৎক্ষণিক তাদেরকে হবিগঞ্জ জেলা সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হয়। দু’জনের শরীরে ১০টির বেশি ছররা গুলি লেগেছে। এরমধ্যে মাইটিভির জেলা প্রতিনিধি নীরঞ্জন গোস্বামী শুভর চোখে বেশি আঘাত লেগেছে। যে কারণে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব বলেন, মানববন্ধন শেষে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে আমিসহ আরও ১০/১৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। ওই এলাকায় বর্তমানে পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে।