প্রচন্ড শীতে সিলেটের শীতবস্ত্র ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো

সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ পৌষ-মাঘ শীতকাল হলেও এবার পৌষে তেমন একটা শীত পড়েনি। শেষের দিকে এসে শীতের তীব্রতা কিছুটা বেড়েছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সিলেটের ফুটপাতে শীতের কাপড়ের বেঁচা-কেনা। এখন রীতিমতো জমজমাট অবস্থা। বিক্রির সাথে সাথে ভাসমান ব্যবসায়ীদের পকেটও যে বেশ গরম তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
অবশ্য নগরবাসীর আক্ষেপ আর হতাশার কারণও হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বাণিজ্য। কারণ, নগরির কিনব্রিজের দক্ষিণপ্রান্ত থেকে একেবারে চৌহাট্টা পর্যন্ত এখন আর রাস্তা বলতে কিছু নেই। সব ভাসমান হকারদের দখলে। সময় গড়ানোর সাথে সাথে রাজপথে সেই চাপ আরও বাড়ছে। মৌসুমের শেষ পর্যন্ত তা বাড়তেই থাকবে।
কিন্তু নগরবাসীর দুর্ভোগ-যন্ত্রণা যাই হোকনা কেন, সময় এখন শীতের পোশাক ব্যবসায়ীদের। নগরির নাগরি চত্বর, কামরান চত্বর,কোর্টপয়েন্ট, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা থেকে আম্বরখানা পর্যন্ত রাস্তার উভয়পাশে নানা ধরণের শীতের পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসছেন ভাসমান ব্যবসায়ীরা। আর প্রতিদিন নগরিতে নানা কাজে আসা লোকজন রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তাদের দোকানে। দোকান মানে রিকশাভ্যানে সাজানো পোশাকের পসরা। চলছে দেদার বেঁচা-বিক্রি। কেউ কিনছেন সোয়েটার কেউবা জ্যাকেট, কেউবা হাতমোজা বা মোজা। এরসাথে দিনে দিনে কম্বলও চলছে দেদার। মাত্র ৩০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকার কাপড়-কম্বল বগলদাবা করে বাড়ির পথে ছুটছেন ক্রেতারা।
কুমিল্লার বাসিন্দা একজন ভাসমান ব্যবসায়ী জানালেন, গেলো বছরের চেয়ে এবার তার ব্যবসা ভালো। অবশ্য তাও আবার গত প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে। এরআগে পসরা নিয়ে বসলেও বিক্রি তেমন একটা হয়নি। কোনোমতে চলেছেন। তবে পৌষের শেষের দিকে এসে তার বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ।
তিনি বিক্রি করছেন নতুন-পুরানো সোয়েটার-জাকেট। শিশুদের শীত পোশাক যেমন আছে তার কাছে, তেমনি আছে অন্যান্য বয়সীদেরও। আছে শীতের প্যান্ট এবং পাজামাও। গড়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার, কোনো কোনোদিন ৮/১০ হাজার টাকারও বিক্রি হচ্ছে। লাভ কেমন থাকে-এমন প্রশ্নের জবাবে মৃদু হেসে তার জবাব-ওই থাহে আরকি, দেড়-দু’হাজার।
গোলাপগঞ্জের জনৈক ব্যক্তি শহরে এসেছিলেন আদালতে হাজিরা দিতে। বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যায় আলাপ হয় এ প্রতিবেদকের সাথে। হাতে ২টি কম্বল, শিশুদের সোয়েটার-জ্যাকেট। কথায় কথায় জানালেন, শীত ফড়ছে বা খুব। হুরুতার লাগি কিছু সুইডার-জ্যাগেটজুগেট কিনলাম। বালার মাঝে ফাইয়া কমল এখানও কিনলাম দেড় আজার টেকাদি (শীত পড়ছে খুব বেশী। বাচ্চাদের জন্য কিছু সোয়েটার-জ্যাকেট কিনেছি। ভাল পেয়ে একটি কম্বলও কিনেছি দেড় হাজার টাকায়)।
জেলা পরিষদের সামনের ফুটপাতে একজন ব্যবসায়ী বসেছিলেন নানা রঙের কম্বল নিয়ে। কথায় কথায় জানালেন, এ কয়েকদিনে বেশ ভালো ব্যবসা হচ্ছে। জানালেন তার কাছে ৩শ’’ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা দামের কম্বলও আছে। তবে দাম হাঁকছেন, কাষ্টমার বুঝে ৮/১০ হাজার থেকে ১০/১২ হাজার টাকা পর্যন্ত।

You might also like