প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে ২০ কোটি টাকা দাবি না মানা পর্যন্ত চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলবে
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকায় উন্নীকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে সিলেটে টানা ৫ দিন যাবত টানা কর্মবিরতি পালন করছেন চা শ্রমিকরা। এর আগে ৪দিন ২ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। কর্মবিরতি পালনের পাশাপাশি বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মিছিলও করেছন চা-শ্রমিকরা। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সিলেট মহানগরীর মালনিছড়া চা-বাগানের শ্রমিকেরা মিছিল বের করেন। পরে লাক্কাতুরা চা-বাগানের শ্রমিকরা এ মিছিলে যোগ দেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেলা ১১টার দিকে মালনিছড়া চা-বাগানের মন্দিরের পাশে শ্রমিকরা জমায়েত হয়ে সাড়ে ১১টার দিকে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে মিছিল শুরু করেন। পরে লাক্কাতুরা চা-বাগানের শ্রমিকেরাও ওই মিছিলে যোগ দেন। মিছিলটি সিলেট বিমানবন্দর সড়ক হয়ে মালনীছড়া চা-বাগান কার্যালয়ের সামনে এসে পৌঁছায়। সেখানে কিছু সময় অবস্থানের পর শ্রমিকেরা আবার মিছিল নিয়ে লাক্কাতুরা চা-বাগানের দিকে চলে যান।
কর্মসূচিতে অংশ নেয়া চা শ্রমিকরা বলেন ‘আমরা কাজ করতে প্রস্তুত। কিন্তু আমাদের প্রাপ্য মজুরি দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে চা-শ্রমিকেরা বঞ্চিত হয়ে আসছে। মজুরি, চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থানসহ বিভিন্ন দিকে আমাদের পিছিয়ে রাখা হয়েছে। এখন আমরা আমাদের প্রাপ্য দাবি চাই।৩০০ টাকা মজুরিসহ বিভিন্ন দাবিতে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে সিলেট ও চট্টগ্রামসহ সারা দেশের ২৩২টি বাগানের শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করছেন। গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন তাঁরা। চা-শ্রমিকদের ধর্মঘট নিরসনে মঙ্গলবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী। তবে বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়নি। এ কারণে বুধবার ঢাকায় দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেছে শ্রম অধিদপ্তর।
তবে যথাযথ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ৫ দিন ধরে চা উৎপাদন বন্ধ হয়ে আছে। এতে চা-শিল্পে প্রভাব পড়ছে। এমনিতেই চা-শিল্প বিভিন্ন কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এরমধ্যে শ্রমিকদের এমন ধর্মঘটে এই শিল্পখাত আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাগানে নতুন পাতা গজিয়েছে। পাতাগুলো এখনই তোলা না হলে সেগুলো মান হারাবে। এদিকে, চা শ্রমিকদের ধারাবাহিক কর্মবিরতি ও আন্দোলনের কারণে সিলেট ও চট্টগ্রামের ১৬৮চা বাগানে থেকে দৈনিক ২০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যমানের চা-পাতা নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি বাগান মালিকদের। তারা বলছেন বাংলাদেশের চা-শিল্প যখন বিশ্ববাজারে প্রভাব বিস্তার করছে। ঠিক তখনই এমন আন্দোলন ৩ হাজার ৫শ কোটি টাকার বাজারকে ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে।