প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার চা বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শনিবার বিকেল ৪টার পরপরই গণভবনে এ বৈঠক শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টায়। ১৩ জন বাগান মালিক এতে অংশ নেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আহমেদ কায়কাউস এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের আশায় বুক বেঁধেছিলেন চা-শ্রমিকরা। তাদের প্রত্যাশা ছিল, প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির একটি সুন্দর সমাধান দেবেন এবং এতে তাদের কাজে ফেরার পরিবেশ তৈরি হবে।মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত ১৮ দিন টানা কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। প্রশাসন ও মালিকপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পরও বিষয়টি সুরাহা হয়নি। তাই প্রধানমন্ত্রী ও বাগান মালিকদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন চা শ্রমিকরা।

তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তাদের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। তাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী একটি সিদ্ধান্ত নেবেন, যা তাদের জন্য সামগ্রিকভাবে কল্যাণকর হবে। তবে তিনি যে সিদ্ধান্তই নেন না কেন, সেটাই মেনে নিয়ে কাজে ফেরার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তারা।বৈঠকের বিষয়ে চান্দপুর চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির প্রধান সাধন সাঁওতাল বলেছিলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে জীবন পরিচালনা করি। তাই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে আমরা ‘মা’ বলে ডাকি। মা আমাদের বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করছেন জেনে আমরা খুবই আনন্দিত। ‘শনিবার তিনি মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আমরা আশা করি তিনি আমাদের একটি সুন্দর সমাধান দেবেন, তবে যে সমাধানই দেন না কেন, তিনি বললে আমরা কাজে ফিরে যাব।বাংলাদেশ নারী চা-শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি খায়রুন আক্তার বলেছিলেন, ‘আমরা ১৮ দিন যাবত ৩শ’ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলনে আছি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী আমাদের বিষয়টি নিয়ে মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন। যেহেতু আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেক বিশ্বাস ও সম্মান করি এবং তিনি আমাদের নিজের লোক মনে করেন, তাই তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা তা-ই মেনে নেব। আশা করি, তিনি ৩শ’ টাকা না হলেও এর কাছাকাছি আমাদের মজুরি নির্ধারণ করবেন।দৈনিক মজুরি ৩শ’ টাকার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলনে নামেন দেশের ১৬৬ চা-বাগানের দেড় লাখের বেশি শ্রমিক। সেদিন থেকে ৪দিন পর্যন্ত ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এরপর গত ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পুরোপুরি কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন। গত ১৯ আগস্ট রাতে মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করার বিষয়ে একটি চুক্তি হলেও সেটি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যান শ্রমিকরা। এরমধ্যে কয়েক দফা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হলেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে থাকা চা-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও বার্তার দাবি জানান শ্রমিকরা।

You might also like