প্রধানমন্ত্রী বরাবরে ডেকোরেটার্স ও সাউন্ড সিস্টেম মালিক সমিতির স্মারকলিপি পেশ

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

সিলেটঃ প্রধানমন্ত্রী বরাবরে ডেকোরেটার্স ও সাউন্ড সিস্টেম  মালিক সমিতির স্মারকলিপি পেশ করোনা ভাইরাসজনিত কারণে সরকারি-বেসরকারিসহ সকল প্রকার সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ডেকোরেটার্স ব্যবসায়ীরা সরকারি অনুদান অথবা সহজ শর্তে বা বিনাসুদে ঋণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।গত (২৯ জুন) সোমবার ‘দক্ষিণ সুরমা ডেকোরেটার্স ও সাউন্ড সিস্টেম মালিক সমিতি, সিলেট’র পক্ষ থেকে সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে দেয়া স্মারকলিপিতে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।স্মারকলিপির অনুলিপি সিলেট-১ আসনের এমপি মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী,পরিকল্পনামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরেও পাঠানো হয়েছে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, মহামারি করোনা ভাইরাসজনিত কারণে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিয়ে-শাদীসহ সকল প্রকারের সামাজিক অনুষ্ঠান এবং প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সরকারি অনুষ্ঠানসমুহও দীর্ঘ প্রায় ৪ মাস যাবত বন্ধ রয়েছে। ফলে ডেকোরেটার্স ও সাউন্ড সিস্টেম ব্যবসায় মারাত্মক মন্দা দেখা দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সমিতির আওতাভূক্ত প্রতিষ্ঠানসমুহের কর্মহীন মালিক-শ্রমিকরা দুর্ভোগে পড়েছেন।একটানা দীর্ঘসময় বন্ধ দোকান ও গোদামে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাঁশ-কাঠ, কাপড়-চোপড়সহ যাবতীয় কাঁচামাল। অকেজো হয়ে যাচ্ছে ইলেক্ট্রনিক্স সরঞ্জাম। ক্রোকারিজ সামগ্রিরও কিছু অংশ ব্যবহারের অনুপযোগী হতে চলেছে। মালামাল রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তার লক্ষ্যে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নাইট গার্ডসহ জরুরি প্রয়োজনে বাধ্যতামুলক ২/৩ জন কর্মচারিকে নিয়োজিত রাখতে গিয়ে এদেরও বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হচ্ছে। তদুপরী দোকান ও গোদাম ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ ইত্যাদি কারণে অর্থ সংকটে পড়ে ডেকোরেটার্স মালিকরা ক্রমশঃ পুঁজি হারাতে বসেছেন।

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, আমাদের সমিতিভূক্ত প্রায় শতাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের মালিক-শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪শ’। এদের সবাই এখন বেকার। অনেক ডেকোরেটার্স বিভিন্ন ব্যাংক বা এনজিও থেকে ঋণ সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। কিন্তু ব্যবসা বন্ধ থাকায় ঋণদাতা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কিস্তি পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়েও সরকারি নির্দেশনা জরুরী হয়ে পড়েছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমাদের সমিতিভূক্ত অনেক ডেকোরেটার্স সাধারণ ছুটি ঘোষণার পূর্ববর্তী সময়ে সরকারি-বেসরকারি অনেক সংস্থার অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। কিন্তু যোগাযোগ বন্ধ থাকায় প্রাপ্য বিল পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ এসব অনুষ্ঠান প্রস্তুতিতে যেসব ডেকোরেটার্স শ্রমিক কাজ করেছেন, তাদের পাওনা মিটিয়ে দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় ডেকোরেটার্স মালিকরা চরম অর্থ কষ্টে রয়েছেন। বিগত সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে দুঃস্থ-দরিদ্রদের সহায়তা দেয়া হয়েছে। কিন্তু ডেকোরেটার্স শ্রমিকরা সরকারি বা বেসরকারি কোন মাধ্যম থেকেই কোন সহযোগিতা বা অনুদান পাননি। পরিস্থিতির আলোকে দূর্গত ডেকোরেটার্স মালিক-শ্রমিকদের দূর্ভোগ লাঘবে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরকারের সমাজকল্যাণ বা দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মোটামুটি সাধারণভাবে খাওয়া-পরার উপযোগী একটি মাসিক অনুদান প্রদানের দাবি জানানো হয়। যদি কোন অনুদান বা আর্থিক সহযোগিতা দেয়া সম্ভব না হয়, তবে প্রত্যেকটি ডেকোরেটার্স যাতে টিকে থাকতে পারে, সে লক্ষ্যে সরকারি মাধ্যমে বিনাসুদে এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের দাবি জানানো হয়। তা হলেই কেবল ডেকোরেটার্স শিল্পটি বিলুপ্ত না হয়ে মোটামুটি টিকে থাকতে পারবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য,সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতোপূর্বে অনুরূপ পৃথক পৃথক স্মারকলিপি সিলেট-৩ আসনের এমপি, সিটি মেয়র, জেলা প্রশাসকসহ তৃণমূল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি বরাবরেও হস্তান্তর করা হয়েছে। দক্ষিণ সুরমা ডেকোরেটার্স ও সাউন্ড সিস্টেম মালিক সমিতি, সিলেট’র সভাপতি মোঃ সাজ্জাদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক রকিব আহমদের নেতৃত্বে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্মারকলিপি হস্তান্তরকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সিনিয়র সদস্য দিলওয়ার হোসেন, সিয়াম আহমদ খোকন, মোঃ টিপু সুলতান, মোঃ রাসেল আহমদ, কবির আহমদ, সাইফুল ইসলাম, সায়েক আহমদ, লিপু সুলতান, শাহীন আহমদ (১), আবুল হোসেন, শাহীন আহমদ (২), হুমায়ুন কবির টিপু, খলিল মিয়া, কামরুল ইসলাম, ফজলু মিয়া, এনামুল হক এনাম, জুনেদ খান, সেলিম আহমদ, তাজ উদ্দিন, জাবেদ আহমদ, সুফি মিয়া, মতিউর রহমান মতিক, শামীবুর রহমান, শিহাব আহমদ প্রমুখ।

You might also like