বরিস জনসন কি আবারও প্রধানমন্ত্রী?
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কি পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের উত্তরসূরী হতে যাচ্পাছেন? আগামী সপ্তাহে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচনে তিনি লড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য টাইমসের বরাতে এমন তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। আরেক ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের খবরেও একই দাবি করা হয়েছে। বরিস জনসন আগেই বলেছিলেন, লিজ ট্রাসের পদত্যাগ করা উচিত। দ্য টাইমসের রাজনৈতিক সম্পাদক স্টিভেন সুইনফোর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুইটারে বরিস জনসনের সম্ভাব্য প্রার্থিতার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন শেয়ার করেছেন।বরিস প্রসঙ্গে স্টিভেন বলেছেন, তিনি ঘটনার গভীরতা বোঝার চেষ্টা করছেন। তবে জনসন বিশ্বাস করেন, এটি জাতীয় স্বার্থের বিষয়।দ্য টেলিগ্রাফের খবরেও বলা হয়েছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর বরিস জনসনকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। তবে জানা যাচ্ছে, তিনি আবারও পুরোনো চাকরি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
নিজ দলের মন্ত্রীদের গণপদত্যাগ ও এমপিদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ জুলাই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টি প্রধান হিসেবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বরিস জনসন। সেদিন ডাউনিং স্ট্রিটে সরকারি বাসভবনের দরজায় দাঁড়িয়ে জনসন জানান, সহকর্মীদের মতামতকে সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি।এর আগে অবশ্য পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন বরিস জনসন। বলেছিলেন, একজন প্রধানমন্ত্রীর কাজ হচ্ছে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করা। তাই আমি পদত্যাগ করবো না। তাছাড়া আমার প্রতি বড় ম্যানডেট রয়েছে।তবে এরপর একযোগে ৫৪ মন্ত্রী পদত্যাগ করলে জনসন সরকারের পতন কেবল সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাঁড়ায়। শেষপর্যন্ত দলীয় মন্ত্রী-এমপিদের অনুরোধে ক্ষমতা ছাড়তে রাজি হন তিনি।এর কয়েক মাস আগে থেকেই একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন বরিস ও তার সরকার। করোনা লকডাউন চলাকালে সরকারি বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিটে একাধিক মদের আসর বসিয়ে তিনি সমালোচনার জন্ম দেন। এরপর তার বিরুদ্ধে দলীয় আস্থাভোট আনা হলেও তাতে পার পেয়ে যান বরিস।
তবে দলে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয় ডেপুটি চিফ হুইপ হিসেবে ক্রিস পিনচারকে নিয়োগের ঘোষণা দেওয়ার পর। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বরিস স্বীকার করেন, ক্রিস পিনচারের অসদাচরণের অভিযোগের বিষয়টি তার জানা ছিল। তারপরও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাকে ডেপুটি চিফ হুইপ করেন তিনি। এটি ছিল তার একটা ‘বাজে ভুল’। বরিসের এই স্বীকারোক্তি তাকে চাপে ফেলে দেয়।গত ৭ জুলাই বরিস জনসন ঘোষণা দেন, তিনি পদত্যাগ করছেন। জনসন আরও বলেন, রাজনীতিতে কেউই অপরিহার্য নয়। আমাদের উজ্জ্বল এবং ডারউইনীয় ব্যবস্থা অন্য নেতা তৈরি করবে।এরপর তার উত্তরসূরী হিসেবে ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন লিজ ট্রাস। তবে অর্থনৈতিক কারণে তার শাসনামল বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেছেন ট্রাস।পদত্যাগকারী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি ১৯২২ কমিটি চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডলির সঙ্গে আজ দেখা করেছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন তারা।সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, দ্য টাইমস, টেলিগ্রাফ