বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদকারীদের অনেককেই হত্যা করেছেন জিয়াউর রহমান
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
জাতীয় সংসদ ভবন থেকেঃ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন,বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা প্রতিবাদ করেছেন তাদের অনেককেই জিয়াউর রহমান হত্যা করেছেন।সাবেক এমপি কামরুন নাহার পুতুলের স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান পটলকে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।চলতি সংসদের প্রয়াত সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে বুধবার সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী ।
হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন,১৯৮১ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসার পর যাদের সব সময় পাশে পেয়েছেন প্রয়াত সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা তাদের একজন।অত্যন্ত সাহসী ও ত্যাগী নেতা ছিলেন তিনি। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে প্রথম কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।একে একে অনেককেই আমরা হারিয়ে ফেলছি, কিন্তু বর্তমান এমন একটা পরিস্থিতি তাতে মৃত্যুর পর অনেক পরিচিতদের দেখতে পর্যন্ত যেতে পারছি না।অপর সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মকবুল হোসেন অসুস্থ থেকেও এলাকার মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে সহায়তা দিয়েছেন।আমি নিষেধ করার পরও শোনেননি, উল্টো বলেছেন,মানুষের কাছে না গেলে তার ভালো লাগে না।
প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ বেগম প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি যখন অনার্সে পড়ি,তখন মাস্টার্সের ছাত্রী ছিলেন মমতাজ বেগম।একসঙ্গে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম,মিছিল করেছি।ওয়ান/ইলেভেনে আমি বিরোধী দলের নেতা হলেও প্রথমে আমাকে গ্রেফতার করা হয়।আমার বিরুদ্ধে বিএনপি ছাড়াও ওয়ান/ইলেভেনের সময় অনেক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়।আমাকে যখন আদালতে আনা-নেয়া করা হয়,তখন মমতাজ বেগমকে দেখেছি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে,সব সময় উনি আমার পাশে ছিলেন।
নিজের প্রিয় শিক্ষক জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন,আমি প্রধানমন্ত্রী বা যাই-ই হই না কেন, আনিসুজ্জামান স্যারকে আমি সব সময় নিজের শিক্ষক হিসেবেই সম্মান করতাম। তার বয়স হয়েছিল। তার চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থাও করেছিলাম। এই দুঃসময়ে অনেক বিশিষ্টজনকে আমরা হারিয়েছি। কাকে ছেড়ে কার কথা বলবো। প্রকৌশল জামিলুর রেজা চৌধুরী পদ্মা সেতু নির্মাণে যথেষ্ট অবদান রেখেছেন,সব সময় খোঁজ-খবর রাখতেন। তিনিও চলে গেলেন।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,এই চরম দুঃসময়ে প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাই একতাবদ্ধ হয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।পুলিশ, র্যাব, আনসার-ভিডিপি, সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, গণমাধ্যমকর্মীরা প্রতিনিয়ত এ দুঃসময়ে সাহসের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে দেশের চরম দুঃসময়ে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা একে একে মৃত্যুবরণ করছেন, মনে হচ্ছে ইতিহাসের পাতা থেকে একটা একটা করে পাতা ঝরে পড়ছে।করোনাভাইরাসের পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলা করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সময়ে প্রায় ২৪ লাখ লোককে আমরা নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়েছিলাম। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিপুলসংখ্যক মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে ফেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফাম অনেক কিছুর ক্ষতি করতে পারলেও আমরা অনেক মানুষের জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছি।তিনি বলেন, করোনার কারণে দেশের অনেক কিছু স্থবির হয়ে যায়, যারা দিনে এনে দিন খায়, তাদের অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়ে। তাদের প্রত্যেককে খুঁজে খুঁজে বের করে সাহায্য পৌঁছে দিয়েছি, অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। দেশের একটি মানুষও যেন কষ্ট না পায়, খাদ্যের অভাবে না থাকে সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।