বন্যায় প্লাবিত সিলেট ও সুনামগঞ্জ, খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
সিলেটঃ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। দুই জেলার অন্তত ১৮টি উপজেলা এবং সিলেট ও সুনামগঞ্জ শহরে পানি প্রবেশ করেছে। এদিকে, সুরমা-কুশিয়ারাসহ জেলার সব নদনদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আনোয়ার সাদাত জানিয়েছেন, সিলেটে বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতে ১২৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। আজ আরও বরাদ্দ এসেছে। ১ হাজার শুকনো খাবারের ব্যাগ এবং পাশাপাশি চিড়া-গুঁড় এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। বন্যাকবলিত প্রত্যেক উপজেলায় পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ১৩৬ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশীদ পয়েন্টে ১৪৮ সেন্টিমিটার ও শেওলা পয়েন্টে ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এদিকে, সিলেট নগরের অর্ধশত এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। আতঙ্কের মধ্যে বাস করছেন নগরবাসী। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাসাবাড়ি ও সড়কে কোমরসমান পানি বিরাজ করছে। পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় সিলেট-তামাবিল সড়কের সোবহানীঘাট এলাকায় যান চলাচল বিঘিœত হচ্ছে।উপজেলাগুলোতে তলিয়ে গেছে ফসলী জমি, ফিশারি, বহু মানুষের ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, সড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পানিবন্দি হয়ে কয়েক লাখ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, সিলেটে আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। উজানের ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অব্যাহত বৃষ্টির কারণে সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হওয়ায় শহরের নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। জেলার অন্তত পাঁচটি উপজেলা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।জেলার তাহিরপুর বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ড, সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা জানিয়েছেন, গতকাল রাত থেকে সুনামগঞ্জে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।উজানের পানি নামায় সুনামগঞ্জের অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জের ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ছাতক পয়েন্টে ১৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এছাড়া সিলেট পয়েন্টে ৭২ মিলিমিটার, কানাইঘাটে ৭০ মিলিমিটার ও শেওলায় ১২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।