বহুল আলোচিত জামাল হত্যা: মা ও স্ত্রী-সন্তানদের আহাজারি থামছে না

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ঘাতকের গুলিতে নিহত সৈয়দ জামাল মিয়ার বৃদ্ধ মা, বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের আহাজারিতে আকাশ- পাতাল ভারি হয়ে ওঠছে। সন্তানের জন্য গর্ভধারিণীর বুকফাটা আর্তনাদ, স্বামীর জন্য বিধবা স্ত্রীর অনবরত আহাজারী আর বাবার জন্য সন্তানদের কান্না যেন থামছে না। অবুঝ সন্তানরা মায়ের কাছে বার বার বাবার কথা জিজ্ঞেস করছে।জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা জানান, ৭ মে রোববার সরেজমিন উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে নির্মম হত্যার শিকার সৈয়দ জামাল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে এই করুণ দৃশ্য অবলোকন করা গেছে।কান্নাজড়িত কন্ঠে নিহত জামাল মিয়ার স্ত্রী উমায়মা বেগম সংবাদকর্মীদের বলেন, সন্ত্রাসীরা আমার নিরপরাধ স্বামীকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করলো। আমার অবুঝ দু’টি শিশু বাবা ‘বাবা’ ‘বলে’ চিৎকার করে কাদঁছে। তাদেরকে কিভাবে শান্তনা দেই? তিনি বলেন, স্বামী, ৬ বছরের মেয়ে সৈয়দা আফছানা ও ৪ বছরের ছেলে সৈয়দ আফছানকে নিয়ে আমার সুখের সংসার ছিল, কিন্তু ঘাতকরা স্বামীকে হত্যা করে আমার সকল আশা ধুলিসাৎ করে দিয়েছে। তিনি তার স্বামী হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করে অবিলম্বে ঘাতকদের গ্রেফতার ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশ প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান।

হত্যাকান্ডের প্রায় দু’সপ্তাহ হতে চললেও সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সৈয়দ জামাল মিয়া (৩৮) হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। উদ্ধার হয়নি ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারে একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পাহাড়ী জেলা খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা এলাকা থেকে হত্যকান্ডের ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে সৈয়দ জুম্মান নামে এক দাগী আসামীকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু মূল হোতা সৈয়দপুরসহ অত্র অঞ্চলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ‘গডফাদার’ বলে বহুল পরিচিত ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসান প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না বলে, তিনি অভিযোগ করেন।অথচ জামাল মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনার পর পরই তার ছোটভাই সৈয়দ হোসাইন মিয়া বাদী হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসানসহ ৫ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে জগন্নাথপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান এ প্রতিবেদকে বলেন, সৈয়দ জামাল হত্যার ঘটনায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, উপজেলার সৈয়দপুর (ইশানকোনা) গ্রামে গত ২৮ এপ্রিল রাত প্রায় ৯টার দিকে ওই গ্রামের সৈয়দ আনহার মিয়ার ছেলে সৈয়দ জামাল মিয়া তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় সৈয়দ জামালের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা সৈয়দ আনহার মিয়া, সৈয়দ আমিন মিয়া, সৈয়দ হোসাইন আহমদসহ ৬ জন গুলিবিদ্ধ হন।

You might also like