বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশকে বহুমুখী প্রস্তাব ভারতের
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ নানা কারণে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছেন না ভারতের।লাদাখ নিয়ে চীনের সঙ্গে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।থেমে নেই নেপাল বা পাকিস্তানও।সেই সঙ্গে ভুটানও মাঝে মধ্যে জানান দিচ্ছে সম্পর্ক অবনমনের কথা।এমন পরিস্থিতিতে এখনও প্রতিবেশীদের মধ্যে কিছুটা ভালো সম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে।আর এজন্য বাংলাদেশকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাছে রাখতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত।ফলে চীনকে ঠেকাতে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে বহুমুখি প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।
শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের বাংলা পত্রিকা জিনিউজের খবরে বলা হয়,দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সবথেকে বড় বাণিজ্য সহযোগী দেশ বাংলাদেশ।গত এক দশকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বেড়েছে।২০১৮-১৯ সালে বাংলাদেশে ভারত প্রায় ৯.২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল।বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছিল ১.০৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।কিন্তু চলতি বছর করোনা দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।তাছাড়া দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে উঠেপড়ে লেগেছে চীন।কিন্তু ভারত সবসময় বাংলাদেশকে বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবেই দেখে এসেছে।আর তাই এবার দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত।
জিনিউজের খবরে বলা হয়,চীন সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে তারা নিজেদের দেশে বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা দেবে।ভারতের সঙ্গে রেষারেষির জন্যই চীনের এমন সিদ্ধান্ত বলে ধরা হচ্ছিল।তবে চীনের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য তেমন হিতকারী হতো না।বরং বাংলাদেশকে বাণিজ্য ঘাটতি ও ঋণের ফাঁদে ফেলতে পারে এই পদক্ষেপ।আর তাই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত।
জানা গিয়েছে,উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের বাধাহীন প্রবেশ নিশ্চিত করতে পারে ভারত।একইসঙ্গে ভুটান ও নেপালের সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে বাংলাদেশকে পণ্য পরিবহণের সুবিধা দেয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।এমনিতেই ভারত ও বাংলাদেশ ১৯৬৫ সালের আগেকার রেল লাইন পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করছে।পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর বুধবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহুমুখী পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। যদিও বাণিজ্যের জন্য বাংলাদেশকে বহু বছর ধরেই একাধিক সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছে ভারত।
এদিকে শুক্রবার ভারতের ইংরেজি দৈনিক ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, তারা জানতে পেরেছে- চীনের বাণিজ্য সুবিধার কারণে বাংলাদেশ দ্বৈত ঘাটতি (আমদানি-রপ্তানি) এবং ঋণের ফাঁদে পড়তে পারে। এ কারণে ভারত স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন রাজ্য এবং অন্যান্য অঞ্চলে বাংলাদেশি পণ্যের অবাধ প্রবেশে বেশ কিছু সংযোগকারী উদ্যোগ সক্রিয় করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক সংযোগ নিয়ে কাজ করেন, এমন বিশেষজ্ঞরা ইকোনমিক টাইমসকে বলছেন, সমুদ্রবন্দর, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন, রেল ও মহাসড়কে বড় ধরনের সংযোগকারী উদ্যোগ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা ভারতের পাশাপাশি ভুটান ও নেপালের বাজারের সঙ্গেও বাংলাদেশকে যুক্ত করতে সক্ষম হবে। ১৯৬৫ সালের আগে ভারত-বাংলাদেশের সঙ্গে রেলের পাশাপাশি অন্যান্য যেসব সংযোগ ছিল সেসব আবারও স্থাপন করার জন্য উভয় দেশই বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।