বানিয়াচংয়ে আকরাম হত্যার  ঘটনায় ৩ মাদ্রাসা ছাত্র আটক

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় এক চাবিতেই খুলে গেল মাদ্রাসা ছাত্র আকরাম খান (৯) হত্যাকা-ের রহস্য। এ ঘটনায় ঘাতক ৩ মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত আকরাম খান উপজেলার মক্রমপুর মরহুম সামায়ুন কবির হাফিজিয়া এতিমখানার ছাত্র এবং একই গ্রামের মৃত দৌলত খানের পুত্র। শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন বানিয়াচং থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব।হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, গত ১৬ নভেম্বর মরহুম সামায়ুন কবির হাফিজিয়া এতিমখানার পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে ডুবানো নৌকার তল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আকরাম খানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে নিহত আকরাম খানের নিকট একটি চাবি ছিল। যে চাবি দিয়ে এতিমখানার অনেক ছাত্রের ট্রাঙ্ক খোলা যেত। এছাড়াও মাদ্রাসার যে কারো কিছু চুরি হলেই সবাই আকরামকে সন্দেহ করতো। সেই সূত্র ধরে এগিয়ে যেতে থাকে পুলিশ।

তদন্তের পর্যায়ক্রমে একই মাদ্রাসার ছাত্র এবং একই গ্রামের বাসিন্দা মস্তু মিয়ার পুত্র ফখরুল মিয়া (১৬), জুলহাস মিয়ার পুত্র ফয়েজ উদ্দিন (১৩) ও মহিবুর রহমানের পুত্র জাহেদ মিয়াকে (১৫) আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে উল্লেখিতরা হত্যাকা-ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।হত্যাকা-ে জড়িত মাদ্রাসা ছাত্রদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, হত্যার কয়েকদিন আগে ফখরুল মিয়ার ট্রাঙ্ক থেকে প্রথমে ৬০ টাকা ও পরে ৫০ টাকা চুরি হয়। সেই টাকা খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ফখরুল মিয়া, জাহেদ মিয়া ও ফয়েজ উদ্দিন জানতে পারে আকরাম খানের নিকট একটি তালা খোলার চাবি রয়েছে, যা দিয়ে অধিকাংশ ছাত্রের ট্রাঙ্কের তালা খোলা যায়। এরপর থেকেই তাদের সন্দেহ হয় আকরাম খান তাদের টাকা চুরি করেছে। সন্দেহ থেকেই তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আকরামকে সুযোগ পেলে উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া হবে বলে তারা পরিকল্পনা করে।পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৬ নভেম্বর সকালে তারা কৌশলে সুযোগ বুঝে আকরাম খানকে মাদ্রাসার পেছনের একটি পুকুরের পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তারা হত্যার উদ্দেশ্যে রশি দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে ফেলে। একপর্যায়ে আকরাম চিৎকার শুরু করলে তার মুখ চেপে ধরা হয়। এরপর ইট দিয়ে তার মাথায় একাধিক আঘাত করে। এতেও মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়ায় আকরামকে ধরাধরি করে পুকুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে পানিতে চুবিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ পানিতে ফেলে মাদ্রাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়ে তারা। পরবর্তীতে বিকেলে আকরামকে খুঁজে পাওয়া না গেলে উল্লেখিতরা ভিকটিমকে খুঁজে বের করার অজুহাতে নৌকা সেচ করার জন্য সেই স্থানে যায় এবং ভিকটিমের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশ তারা তিনজন মিলেই উদ্ধার করে।

You might also like