বিচারবিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার, আদালতের রায়ের জন্য ধৈর্য্যের আহ্বান

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে সংঘাতে মৃত্যুর ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি আন্দোলনকারীদের কোটার বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈয্য ধরার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন ‘আমার বিশ্বাস তারা ন্যায়বিচার পাবে, হতাশ হতে হবে না।’

কাদের উস্কানিতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলো, কারা কোন উদ্দেশ্যে দেশকে একটি অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিল, তা তদন্ত করে বের করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড ও লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, এরা যে হোক না কেন তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডসহ যে সকল অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে সে সকল বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।’

আদালতের রায়ে কোটা বাতিলের পর হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আপিল করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালত শিক্ষার্থীদের কোনো বক্তব্য থাকলে শোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।

‘এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের সুযোগ রয়েছে। এই আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের সুযোগ থাকা স্বত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে দুষ্কৃতিকারীদের সংঘাতের সুযোগ তৈরি করে দেবেন না।’

কোটা সংস্কার আন্দোলন, পরে সংঘর্ষ এবং হতাহতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হলো এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তাদের উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার জন্য বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। যেহেতু বিষয়টি উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে তাই সকলকে ধৈর্য ধরতে আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্দোলনের পেছনে দুষ্কৃতিকারীরা আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো কিছু মহল এই আন্দোলনের সুযোগটা নিয়ে অনাকা‌ঙ্ক্ষিত উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকা‌ণ্ডে লিপ্ত হয়। এর ফলে এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যে সকল ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারাবার বেদনা যে কতটা কষ্টের তা আমার থেকে আর কে বেশি জানে?’

যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যে সকল ঘটনাগুলো ঘটেছে তা কখনই কাম্য ছিল না। চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মমভাবে নিচে ছুঁড়ে ফেলে অনেক ছাত্রদের হাত পায়ের রগ কেটে দেয়। তাদের উপর লাঠিপেটা এবং ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে, একজন মৃত্যুবরণ করেছে, অনেকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ঢাকা, রংপুর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবন ও ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হলে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করা হয়।’

You might also like