বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন নিচ্ছেন সহকারী শিক্ষক
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকলেও যথারীতি বেতন নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের সাহিদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা আফরিন আশার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে একাধিকবার অবহিত করা হলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
তাহিরপুর থেকে সংবাদদাতা জানান, ২০২০ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন সাজেদা আফরিন আশা। ২০২২ সালের শেষ দিকে আইইএলটিএস কোর্স করার কথা বলে সিলেটে থাকতে শুরু করেন তিনি। এরপর থেকে বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় প্রধান শিক্ষক ফোন করলে ওই শিক্ষক জানান, তিনি অসুস্থতার কারণে মেডিকেল ছুটিতে আছেন। সময়ে সময়ে তাঁর কাছ থেকে এমন উত্তর পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে একাধিকবার অবহিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি শিক্ষা কর্মকর্তা। পরে জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই মাসে তিনি ইংল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে বছর দেড়েক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন শিক্ষক আশা। নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন তিনি। জুলাই মাসে ইংল্যান্ড চলে যাওয়ার আগেও তিনি প্রতিষ্ঠানকে এ ব্যাপারে কিছুই জানাননি। পরে বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্য জানতে পারেন প্রতিষ্ঠানসংশ্লিষ্টরা। বিদেশ চলে যাওয়ার পরও মাস দুয়েক বেতন-ভাতা নিয়েছেন ওই শিক্ষক।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা বেগম বলেন, ‘‘সহকারী শিক্ষক সাজেদা আফরিন আশা বিদেশ চলে গেছেন। চিকিৎসার অজুহাতে বছরখানেক তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলেও তিনি মেডিকেল ছুটির বিষয়ে কখনোই প্রতিষ্ঠানকে অবগত করেননি। বিষয়টি একাধিকবার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।’
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (বাদাঘাট ইউনিয়ন ক্লাস্টারের দায়িত্বরত) কামরুজ্জামান শেখ বলেন, সহকারী শিক্ষক সাজেদা আফরিন আশা তাদের কোনো কথাই শোনেননি। অনেক দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও মেডিকেল ছুটির বিষয়ে সুপারিশ করেননি।
দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও ওই শিক্ষক কীভাবে বেতন-ভাতা পেলেন, জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, তিনি বর্তমানে প্রশিক্ষণে আছেন। এ বিষয়ে তাঁর খোঁজখবর নিয়ে জানতে হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল খায়ের জানান, সাজেদা আফরিন আশা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি নাগাদ ছুটিতে ছিলেন। এরপর থেকে তিনি আর স্কুলে যাননি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের প্রতিবেদন এনে তিনি বিদেশে আছেন মর্মে তাঁকে চাকরিচ্যুত করার লক্ষ্যে একটি চিঠি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে।
অবশ্য এরআগে থেকে সাজেদা আফরিন আশার বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি এ কর্মকর্তা।