বিনা অপরাধে জেল খাটা জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ কোনো অপরাধ ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ভুল আসামি হয়ে প্রায় তিন বছর কারাভোগ করা পাটকল শ্রমিক জাহালমকে ১ মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা ব্রাক ব্যাংককে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।এ সময় আদালত বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তারা নিজেদের বাঁচাতে যেনোতেনো ভাবে নিরপরাধ জাহালমকে আবু সালেক হিসেবে ফাঁসিয়ে দেয়। পাশাপাশি দুদকের কর্মকর্তারা আইন অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করেনি।

আলোচিত এই মামলার শুনানিকালে আদালতে দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এছাড়া ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে মামলার শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী আনিসুল হাসন। পাশাপাশি সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ জাকির হোসেন। আর মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।এর আগে বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর রায়ের জন্য দিন ঠিক করেন। চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি জাহালমের ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে রুলের শুনানি শেষে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করবেন বলে অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিতদাশ গুপ্ত। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। এছাড়া রুলও জারি করেন আদালত।একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চান। সে আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা আকারে তা উপস্থাপন করেন।

পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফআইআর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট ও সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেন।এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট গত ১৭ এপ্রিল জাহালমকাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুদকের প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে এসব মামলায় দুদক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খেটেছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন এই জাহালম। তিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক।

You might also like