বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচন:প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে নামলেন ১০ মেয়র ও ৫৮ কাউন্সিলর প্রার্থী

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ উৎসবের আমেজে বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হয়েছে। এবার ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন ১০ মেয়র ও ৫৮ কাউন্সিলর প্রার্থী। ইতোমধ্যেই তাদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। এরপর প্রার্থীরা নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন, মাজার জিয়ারত এবং কর্মী-সমর্থক নিয়ে জোরেশোরে প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন। এছাড়া, প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুরু করেছেন ভোট প্রার্থনা। ইতোমধ্যেই পৌরশহরসহ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন সড়কে টানানো হয়েছে পোস্টার, চলছে ছন্দে ছন্দে মাইকিংয়ে প্রচারণা। আগামী ১৫ জুন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে এ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ছুটির দিন থাকা স্বত্বেও পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গত শুক্রবার উপজেলা পরিষদ হলরুমে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন পৌরসভা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেন। এ সময় প্রতীক পান আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মো. আব্দুস শুকুর (নৌকা), জাতীয় পার্টির সুনাম উদ্দিন (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির এ্যাডভোকেট আবুল কাশেম (কাস্তে), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন (জগ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী জিএস ফারুকুল হক (চামচ), আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী আব্দুল কুদ্দুছ টিটু (হেলমেট), আহবাব হোসেন সাজু (কম্পিউটার), আব্দুস সামাদ আজাদ (হ্যাঙ্গার), মো. আব্দুস সবুর (মোবাইল) ও অজি উদ্দিন (নারিকেল গাছ)।প্রতিদ্বন্ধী ১০ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ৩ জন দলীয় এবং ৭ জন স্বতন্ত্র। আবার তাদের মধ্যে ৬ জনই হলেন ইউরোপ ও আমেরিকা প্রবাসী। এরমধ্যে ফারুকুল হক, আব্দুল কুদ্দুছ টিটু ও আব্দুস সবুর যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এবং আব্দুস শুকুর ও অজি উদ্দিন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও কানাডা প্রবাসী আহবাব হোসেন সাজু।এ নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত দলগতভাবে অংশগ্রহণ করছে না। তবে, আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীর সাথে আওয়ামী ঘরাণার আরো ৩ জন শক্তিশালী প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এ জন্য নির্বাচন অনেকটা জটিল রূপ ধারণ করেছে। এ মুহূর্তে নির্বাচনে কে এগিয়ে, আর কে পিছিয়ে তা নির্ধারণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই এখন পর্যন্ত পঞ্চমুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে, সময় যত গড়াবে ততই ফলাফলের অগ্রসর তালিকা অনেকটা পরিস্কার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর থেকে ওয়ার্ডভিত্তিক কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। এতে নির্ধারিত প্রতীক নিয়ে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৮ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।প্রতীক বরাদ্দ শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। তিনি জানান, নির্বাচনে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৩৬৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৬২৫ জন ও নারী ভোটার ১৩ হাজার ৭৪৪ জন। তিনি আরো জানান, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে রোববার থেকে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের সাথে বিয়ানীবাজারে মতবিনময় করবেন নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমান। এখান থেকে নির্বাচন বিষয়ে পরিষ্কার রোডম্যাপ পাওয়া যাবে। তিনি নির্বাচন সুন্দর করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।জানা যায়, গত পাঁচ বছরে ভোট বেড়েছে ২ হাজার ৩৪৫। এরআগে ২০১৭ সালের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ২৫ হাজার ২৪ জন।সহকারী রিটার্নিং কমকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন জানান, আচরণবিধি অনুযায়ী প্রতিদিন বেলা দু’টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা করা যাবে। আচরণ প্রতিপালনের জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, প্রার্থীদের সবধরণের নির্বাচনী কার্যক্রম শেষ হবে আগামী ১৩ জুন রাত ১২টায়।উল্লেখ্য, ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিয়ানীবাজার পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু সীমানা সংক্রান্ত মামলার কারণে প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল। নির্বাচিত মেয়র শপথ নেন ২২মে এবং পরদিন ২৩মে তিনি পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

You might also like