বিশ্বনাথের পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ৭ কাউন্সিলরের অনাস্থা

সিলেট অফিস 
সত্যবাণী
ক্ষমতার অপব্যবহার করে ময়লা-আবর্জনার ব্যয় দেখিয়ে রাজস্ব খাত থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে বিশ্বনাথের পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। ময়লা-আবর্জনা বিশ্বনাথ শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ প্রবাসী চত্বরের পাশে ও বাসিয়া নদীতে ডাম্পিং করেছেন। এমনকি পৌরসভার টাকা অন্য ইউনিয়ন ও অন্য উপজেলায় বিতরণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সরকারের রাজস্ব খাত থেকে তিনি বাজেট অনুসরণ না করে বিভিন্ন নামে-বেনামে ভূয়া বিল ভাউচার করেও বিপুল পরিমান টাকা তুলে নিয়েছেন তিনি। পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া জনপ্রতি ২/৩ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে একক ক্ষমতা বলে মাস্টার রোলের মাধ্যমে নিজের আত্মীয়-স্বজনকে পৌরসভায় নিয়োগ দিয়েছেন।
বিশ্বনাথ পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বিভিন্ন সময় দরপত্র ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে কাজ পরিচালনা করছেন। শুধু তাই নয়, কাউন্সিলরদের অনুমোদন-প্রত্যয়ন ছাড়া লাখ লাখ টাকার বিল পরিশোধের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবত অর্থ আত্মসাৎ করে চলেছেন।
দুর্নীতির সুবিধার্থে পৌর কার্যালয় থেকে অফিসিয়াল কাগজপত্র, ফার্নিচার ও ল্যাপটপ তার নিজের বাসায় নিয়ে পৌর স্টাফদের দিয়ে অফিসের কাজ করাচ্ছেন। মেয়র প্রত্যেক মাসের সাধারণ সভা পৌর কার্যালয়ের হলরুমে না করে তার বাসায় করে থাকেন। এতে জনগণ সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, পৌর পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনায় স্বচ্ছতারও অভাব দেখা দিয়েছে।
এছাড়াও পৌর মেয়র কাউন্সিলর ও পৌরবাসির সাথে সব সময় অসৌজন্যমূলক আচরণ, স্বজনপ্রীতি, গালমন্দ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভারসাম্যহীনভাবে পৌর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার অনিয়ম-দুর্নীতি আর ভারসাম্যহীন আচরণের কারণে কাউন্সিলরদের সাথে সাথে পৌরবাসীও অতীষ্ঠ। বিচার-সালিশের ভিডিও করে এসব তার ফেসবুক আইডিতে প্রচার করে জনগণের মানহানি ঘটানোর প্রয়াস চালান।
বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা জানান, এমন বেশ কয়েকটি অভিযোগ এনে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ এর ৩৮ ধারা মোতাবেক অনাস্থা এনে একটি লিখিত প্রস্তাব দাখিল করেছেন ৭ জন কাউন্সিলর। ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কাছে তারা এই অনাস্থা প্রস্তাব লিখিতভাবে দাখিল করেছেন।
লিখিত এই অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন প্যানেল মেয়র-১ রফি মিয়া, প্যানেল মেয়র-২ সংরক্ষিত কাউন্সিলর সাবিনা বেগম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রাসনা বেগম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর লাকী বেগম, কাউন্সিল রাজুক মিয়া রাজ্জাক, জহুর আলী ও শামীম আহমদ। গত ৯ এপ্রিল দুপুরে পৌর পরিষদের হলরুমে এক সভার মাধ্যমে এই অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে চাইলে মেয়র মুহিবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেয়া হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ করেন নি।

You might also like