বিশ্বম্ভরপুরে চোর ভেবে পিঠিয়ে হত্যা অত:পর বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে দিনমজুরকে চোর ভেবে পিঠিয়ে হত্যার পর বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফনের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার দক্ষিন বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহতের নাম আব্দুর রশিদ (৪৮)। সে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের দক্ষিন মুখশেদপুর গ্রামের মৃত. আব্দুল বারিকের পুত্র।এক সুত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে ধান কাটার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বের হয়ে উপজেলার বাকগাও গ্রামে যায় নিহত আব্দুর রশিদ। গরু চোর সন্দেহে তাকে বাকগাও গ্রামের রহিছ মিয়ার পুত্র ঝালু মিয়া ও তার ভাইয়েরা আটক করে মারপিট করেন এবং পরবর্তীতে তাকে রাত অনুমান ১০টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদ মিয়ার কার্যালয়ে রেখে আসে। সেখানে ইউনিয়ন উদ্যোক্তা বদরুল তার বক্তব্য মোবাইলে রেকর্ড করেন এবং ডিউটিরত চকিদার রাত অনুমান ১২টায় তার মৃত্যূর সংবাদ ইউপি চেয়ারম্যানকে নিশ্চিত করেন। চেয়ারম্যান এরশাদ মিয়া বিশ্বম্ভরপুর থানা পুলিশকে অবহিত করেন যে,একটি পাগল পরিষদের বারান্দায় মারা গেছে এবং তার লাশ পড়ে আছে।
বিশ্বম্ভরপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে শনিবার সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে আসেন এবং লাশ ময়না তদন্ত শেষে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে নিহতের কবরস্থ করা হয়।ভিডিও সুত্রে দেখা যায়, দক্ষিন বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা বদরুল তাকে প্রশ্ন করলে সে উত্তর দেয় যে, তারবাড়ী মুখশেদপুর গ্রামে। সে কাজে এসেছিল এবং তার পাওনা ৫শ টাকা বেতন দেয় নাই। উল্টো তাকে গরু চোর ভেবে মারপিট করেছে। সে তার পরিচয় দিয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। তাকে বলা হয়েছিল তুমি চোরের গ্রামের মানুষ। সে বলছে চোম্মাকমান্ডার মরে গেছে। চোম্মাকান্ডার ছিলেন চোরের সরদার।এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদ মিয়া জানান, পরিষদের বারান্দায় অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকার খবর আমার চৌকিদার জানিয়েছিল এবং তদানুযায়ী বিশ্বম্ভরপুর থানা পুলিশকে খবর দিয়ে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। তবে আজকে লাশের পরিচয় জানতে পেরেছি।
এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জানান, নিহতের স্বজনরা এসেছিল এবং আমাকে একটি ভিডিও দিয়েছেন। ভিডিও অনুযায়ী তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছি। এ ছাড়াও যেহেতু লাশের ময়না তদন্ত হয়েছে, পিঠিয়ে হত্যার রিপোর্ট আসলে যথারীতি হত্যা মামলা রুজু করা হবে।এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হায়াতুন নবী জানান, বিষয়টি শুনেছি, তদন্তপূর্বক যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।