ব্রিটেনে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যার সঠিক কোন তথ্য নেই হোম অফিসে: রিপোর্ট প্রকাশ

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

লন্ডনঃ গত ১৫ ধরে ব্রিটেনে কতজন অভিবাসী অবৈধভাবে বসবাস করেছেন, তার কোন সঠিক তথ্য নেই হোম অফিসে।সর্বশেষ ২০০৫ সালের এক রিপোর্টে বলা হয়েছিলো ব্রিটেনে ৪লাখ ৩০ হাজার মানুষের বসবাসের কোন অধিকার নেই।তবে স্বাধীন একটি গবেষণা সংস্থার সূত্রে ন্যাশনাল অডিট অফিস জানিয়েছে ব্রিটেনে ১০ লাখের বেশি মানুষ কাগজপত্রহীন ভাবে বসবাস করছেন।হোম অফিস জানিয়েছে ব্রিটেনে বসবাসের অনুমতিহীন এসকল মানুষদের স্থানান্তরে অন্যান্য সংস্থার সাথে যৌথভাবে কাজ করছে তারা।

পার্লামেন্টের আর্থিক নজরদারি বিভাগের মেগ হিলিয়ার বলেছেন,কত লোক অবৈধভাবে বসবাস করছেন তার কোন ধারনাও নেই হোম অফিসের।এদিকে পাবলিক একাউন্ট কমিটির সভাপতি লেবার দলীয় এমপি বলেছেন,এদের খুঁজে বের করতে হোম অফিসের কোন আগ্রহ নেই।একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে হোম অফিস প্রতি ২ লাখ ৪০ হাজার থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার মামলা প্রতি বছর পেয়ে থাকে।এদিকে পিউ রিসার্চ সেন্টার বলছে ব্রিটেনে ১২ লাখের বেশি মানুষ অবৈধভাবে বসবাস করছেন। যদিও ন্যাশনাল অডিট অফিস বিষয়টি যাচাই করেনি।সর্বশেষ প্রতিবেদনে পিউ রিসার্চ সেন্টার যা দাবি করছে তা খুবই সরল: এই মুহূর্তে ব্রিটেনে প্রায় আট থেকে ১২ লাখ অবৈধ অভিবাসী বাস করছে।পিউ সেন্টারের ব্যাখ্যা অনুযায়ী ‘অবৈধ অভিবাসী’ সংজ্ঞা হল এমন কোন লোক যার কোন দেশে থাকার বৈধ অধিকার নেই। নানা দেশে তাদের নানা নামে ডাকা হয়ে থাকে: ‘অনুমতিপত্র-বিহীন অভিবাসী’ কিংবা ‘দলিল-বিহীন অভিবাসী’ ইত্যাদি।

ব্রিটেনের অফিস অফ ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে আসা ব্রিটিশ নাগরিকদের মোট সংখ্যা ২৪ লাখ।ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যাকে হোম অফিস নামে ডাকা হয়, সেটি বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে আসা ১৫ লাখ লোকের হাতে কোন না কোন বৈধ কাগজপত্র, যেমন ওয়ার্ক ভিসা, রয়েছে।এর পর গবেষণা কেন্দ্রটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে আসা মানুষের মোট সংখ্যা থেকে বৈধ কাগজপত্র রয়েছে এমন লোকের সংখ্যা বাদ দিয়েছে।ঐ তথ্যকে আরও যাচাই বাছাই করে পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষকরা একমত হয়েছেন যে ব্রিটেনে আট থেকে ১২ লাখ অবৈধ অভিবাসী বসবাস করছেন।কিন্তু এই হিসেবে মধ্যে একটা সমস্যা রয়েছে। সেটা হল এটা অনুমানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।

বিবিসি এই বিষয়টি নিয়ে আগেও রিপোর্ট করেছে যে এই মুহূর্তে আসলে কত অবৈধ অভিবাসী ব্রিটেনে রয়েছে সে সম্পর্কে সরকারের কোন ধারণাই নেই।দ্বিতীয়ত, এখন ব্রিটেনে বসবাস করছেন, তাদের মধ্যে কতজনের হাতে বৈধ কাগজপত্র রয়েছে সেই সংখ্যা হোম অফিসও জানে না।যেমন, ব্রিটেনের বৈধ বাসিন্দা ছিলেন, এমন কোন লোক যদি তার নিজ দেশে ফিরে গিয়ে থাকেন, কিংবা তার মৃত্যু হয়ে থাকে, সেটা জানার কোন উপায় নেই।পিউ রিসার্চ সেন্টার এসব দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিয়েছে, তবে উল্লেখ করেছে তাদের এই গণনা বাস্তবতার এতটাই কাছাকাছি যে নীতিনির্ধারকরা এর ওপর ভিত্তি করেই পদক্ষেপ নিতে পারবেন।গত ২০ বছর ধরে অভিবাসনের ধারা থেকে আমরা যা জানতে পারি, এবং ব্রিটেনে মোট অবৈধ অভিবাসীর যে হিসেব আগে জানা গেছে, তার সাথে পিউ গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিবেদনের খুব একটা তফাৎ নেই।

হোম অফিস ২০০৫ সালে একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল এই সংখ্যা তিন লাখ ১০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার।দু’হাজার সতের সালে হোম অফিসের পরের আরেকটি গবেষণায় আগের তথ্যগুলিকে হালনাগাদ করে বলা হয়েছিল এই সংখ্যা চার লাখ ১৭ হাজার থেকে আট লাখ ৬৩ হাজার হবে। এদের মধ্যে ছিল সেই সব শিশু যাদের জন্ম ব্রিটেনে হয়েছে।এর পরের বছরগুলিতে ইউকে এবং ইউ-তে অভিবাসনের হার অনেক বেড়েছে। সেই বিচারে পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণায় খুব একটা বাড়িয়ে বলা হচ্ছে না।কিন্তু তারপরও এই নিয়ে অনেক সমালোচনা থাকবেই। যারা এই তথ্যকে বিশ্বাস করতে রাজি নন, তারা বলবেন বানোয়াট উপাত্ত ব্যবহার করে এই ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।সূত্র: বিবিসি

You might also like