ব্রিটেনে তুলে নেয়া হচ্ছে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, দেশটির কোভিড লকডাউন রোডম্যাপের চূড়ান্ত পর্যায়ে মাস্ক পরার আইনি বাধ্যবাধকতা এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নিয়ম তুলে নেয়া হবে।গত ১৬ মাস ধরে প্রায় নিয়মিতভাবে যেসব নিষেধাজ্ঞা জারি করা ছিল, যেমন বাড়ির মধ্যে পালনীয় ৬টি নিয়ম এবং ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম মানে বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশনাও বিলুপ্ত করা হবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী কোভিড লকডাউন রোডম্যাপের শেষ ধাপ ১৯শে জুলাই শুরু হবে। তার আগে ১২ই জুলাই সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করেই সে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে জনসন বলেছেন, স্কুল খোলা, ভ্রমণ এবং সেল্ফ আইসোলেশন বিষয়ে নতুন নির্দেশনা কয়েকদিনের মধ্যে জানানো হবে। মুখ ঢেকে রাখার আইনগত কোন বাধ্যবাধকতা না থাকলেও, ‘সৌজন্য’ হিসেবে জনাকীর্ণ কোন জায়গায় গেলে তিনি নিজে মাস্ক পরিধান করবেন।জনসন বলেছেন, ইংল্যান্ডে সফল টিকা কার্যক্রমের কারণে নতুন কোভিড রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর হার কমানো গেছে, আর সে কারণেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ যেগুলো মানার জন্য আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল তা তুলে নেয়া সম্ভব হচ্ছে।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এ মাসের শেষের দিকে দেশটিতে দিন ৫০ হাজার রোগী শনাক্ত হতে পারেন এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। গণটিকা কার্যক্রমের মাধ্যমে যখন আমরা পরিষ্কারভাবে অনেকটাই সফল হয়েছি, তখন সামনে না এগুলে কবে এগুবো? যারা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন, তাদের সেল্ফ আইসোলেশনের নিয়ম আগের মতই থাকবে।ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, টিকার ডোজ সম্পন্ন হয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য নতুন নির্দেশনা শীঘ্রই জানিয়ে দেয়া হবে।দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ জানিয়েছেন, ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে থাকা অবস্থায় মানুষকে যেসব অবশ্য পালনীয় বিধিমালা অনুসরণ করতে হবে, সে সম্পর্কে মঙ্গলবার অর্থাৎ আজই তিনি পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন।
নতুন দৃষ্টান্ত
বিবিসির স্বাস্থ্য প্রতিবেদক নিক ট্রিগেল বলেছেন, বিশেষ করে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে দেশে যখন নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে, সে অবস্থায় বিশ্বের কোন দেশ এভাবে বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার উদ্যোগ নেয়নি।বিশ্লেষকদের কেউ কেউ এজন্য অন্তত শরৎকাল পর্যন্ত অর্থাৎ যখন দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের টিকাদান সম্পন্ন হবে, সে পর্যন্ত অপেক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন। নীতিগতভাবে সেটি ভালো শোনালেও, বিজ্ঞানীরা সরকারকে যেমন পরামর্শ দিচ্ছেন তাতে মনে হচ্ছে তারা সরকারের গ্রীষ্মকালীন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়াকে সমর্থন করেছেন।নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ফলে সব সময় সংক্রমণের হার বাড়ে। সংক্রমণ পিছিয়ে দেয়ার চেষ্টা করার সমস্যা হচ্ছে খারাপ সময়ে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।একই সাথে গ্রীষ্মে ফ্লুর মৌসুম চলে। ফলে কোভিডের সাথে ফ্লু যোগ হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে এমন আশংকা রয়েছে। সোমবার যুক্তরাজ্যে ২৭ হাজার ৩৩৪ জন আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন, মারা গেছেন নয়জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি। সূত্র: বিবিসি বাংলা