বড়শালায় গুঁড়িয়ে দেয়া হলো একটি পুরনো বাজার পথে বসে গেছেন ৩ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সিলেট শহরতলীর খাদিমনগর ইউনিয়নের বড়শালা এলাকায় ১৮ একর ভূমি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। এই ভূমির মধ্যে ছিলো একটি পুরনো বাজার। যেটি বড়শালা নতুন বাজার নামে পরিচিত ছিলো। শনিবার সেই বাজারের অন্তত ৩০০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান শেষে ভূমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গেছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, ব্যবসায়িরা দাবি করছেন উচ্ছেদের আগে তারা কয়দিন সময় চেয়েছিলেন। কর্তৃপক্ষ তাদের সেই সময় দেয়নি।
বড়শালা নয়াবাজার ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান পংকি দাবি করেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭৩ সাল থেকে বড়শালা নয়াবাজার চালু হয়। বাজারে প্রায় ৩০০-এর মতো দোকান রয়েছে। এরমধ্যে কাঁচাবাজারের অংশটি সদর উপজেলা প্রশাসন ইজারা দিতো। বাজারের বাকি অংশের মালিকানা প্রতিরক্ষা বিভাগের। ব্যবসায়ীরা প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে ইজারা নিয়ে বাজার পরিচালনা করতেন। সম্প্রতি বাজারের ওই জায়গার নিয়ন্ত্রণভার প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে পায় সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। এরপর কর্তৃপক্ষ এই জায়গা ওসমানী বিমানবন্দরের আওতায় নিতে বাজারে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

হাবিবুর রহমান পংকি আরো দাবি করেন, সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে যখন ভূমি হস্তান্তরের বিষয়টি জানানো হয় তখন ব্যবসায়িরা নিজেদের মালামাল সরিয়ে নিতে এবং বকেয়া টাকা তোলার সুযোগ পেতে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বাজারে তারা সমাবেশও করেন। তবে সিভিল এভিয়েশন থেকে সময় দেয়া হয়নি। শনিবার দোকানকোটা উচ্ছেদে অভিযান চালায় কর্তৃপক্ষ।বড়শালা নয়াবাজার ব্যবসায়ি সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ মুন্না বলেন, বাজারের কাঁচাবাজার অংশ উপজেলা প্রশাসন থেকে লিজ নেয়া। লিজের মেয়াদ আগামী ডিসেম্বর অবধি। বাজারের বাকি অংশ (১৪৮৭নং দাগ) প্রতিরক্ষা বিভাগের। আমরা চট্টগ্রামে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে ইজারা নিয়ে ব্যবসা করতাম। এখন জানতে পারি প্রতিরক্ষা বিভাগ ভূমির মালিকানা সিভিল এভিয়েশনকে দিয়েছে। ফলে ওসমানী বিমানবন্দরের আওতায় নিতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। তবে আমরা সময় চেয়েছিলাম। হঠাৎ করে উচ্ছেদ অভিযানে যাওয়ায় আমরা ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। আমরা অনেকটা পথে বসে গেছি। সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। লাখ লাখ টাকা বাকি। এই টাকা কখনো তোলা যাবে না।সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ভূমির মালিকানা প্রতিরক্ষা বিভাগের ছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই ভূমি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে। যে কারণে আমরা সেটি দখল বুঝে নিয়েছি। সেখানে সীমানা প্রাচীর তুলে উন্নয়ন কাজ করা হবে। এছাড়া এর বাইরেও নতুন টার্মিনালের জন্য আরও ১৬০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে।ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের বিষয়ে তিনি বলেন, ভূমিটি অবমুক্তির জন্য এরআগে ব্যবসায়িরা মামলা করেছিলেন। সেটি খারিজ হয়েছে। ফলে তাদের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল দোকানপাঠসহ স্থাপনা সরিয়ে নিতে। নির্ধারিত সময়ে তারা পদক্ষেপ না নেয়ায় স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে যেতে হয়েছে।

You might also like