মধ্যনগরে আশ্রয়ন প্রকল্পে স্থান পেলো ২০টি দরিদ্র পরিবার
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ ‘আগে আমরা এই আওর (হাওর) পাড়ে কোন রহম (রকম) ছাপটা (চালাঘর) বাইন্দা (তৈরী করে) থাকতাম। এহন (এখন) আর আমরার (আমাদের) কোন কষ্ট নাই। শেখ হাসিনা সরকার আমরার (আমাদের) দুঃখ দূর কইরা দিছেন।’ এমনটি বলছিলেন সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর ও জমি পাওয়া সত্তরোর্ধ্ব বয়সের মো. আক্কেব আলী।
মধ্যনগর থেকে সংবাদদাতা জানান, মধ্যনগরের বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে আশ্রয়ন প্রকল্পে ২০টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে সম্প্রতি ঘর ও জমি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ প্রতিপাদ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা এবং মধ্যনগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৯টিতে প্রথম ধাপের ৩শ’ ও দ্বিতীয় ধাপের ২শ’ টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হলেও মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে কোনো ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
তবে ৪র্থ ধাপের ১শ’ টি ঘরের মধ্যে ২০টি ঘর পেয়েছে বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃহহীন ও ভূমিহীন ২০ পরিবার। পাকাঘর পেয়ে খুব খুশী ইউনিয়নের আলমপুর নয়াপাড়ার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলো। ২ শতাংশ জমিতে দু’টি কক্ষের একটি আধাপাকা ঘর জীবন বদলে দিয়েছে ওই ২০টি পরিবারের। যারা একটা সময় সরকারি জায়গায় কোন রকম ঘর তৈরি করে জীবন কাটাতেন, তারা এখন স্থায়ী ঘর পেয়েছেন। তারা পেয়েছেন একটি সেমিপাকা বসতঘর, পাকা টয়লেট, রান্নাঘরসহ এক খন্ড জমি।
মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে মধ্যনগর উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে এসব ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের আলমপুর নয়াপাড়া এলাকাটি সম্পুর্ণভাবে খাস জমিতে অবস্থিত। পার্শ্ববর্তী রৌহা ও আলমপুর গ্রামের ভূমিহীন-অতি দরিদ্র পরিবারগুলো সর্বস্ব হারিয়ে এই খাস জমিতে ভিটা জাগিয়ে বসবাস উপযোগী করেছে। সেখানে অসহায় ২০টি পরিবারকে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় পুনর্বাসনের জন্য ২০টি ঘর নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহার নতুন ঘর পেয়ে আনন্দিত মজিবুর রহমান, নুরুল আমিন, চান মিয়া, বাচ্চু মিয়া, আক্কেব আলী, নাজিম উদ্দিনসহ সবাই। তারা সকলেই সরকারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, আলমপুর নয়াপাড়ার ২০টি ভূমিহীন পরিবারের প্রত্যেকে আশ্রয়ন প্রকল্পে একটি করে ঘর ও ২ শতক জমি পেয়েছেন। তবে ইউনিয়নে আরো অনেক গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার রয়েছে। ইতিপূর্বে দুই ধাপে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার আশ্রয়ন প্রকল্পের ৫০০টি ঘরের মধ্যে এ ইউনিয়নে কোনো ঘর দেয়া হয়নি। যা খুবই দুঃখজনক।
মধ্যনগরের ইউএনও’র দায়িত্বে থাকা ধর্মপাশা উপজেলার অতিরিক্ত কমিশনার (ভূমি) মোঃ অলিদুজ্জামান বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৩টি ধাপে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় মোট ৬০০টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ঘর ও জমি পেয়েছেন। চতুর্থ পর্যায়ে মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে ২০টি পরিবারকে বিনামূল্যে জমি ও রঙিন টিন দিয়ে আধাপাকা ঘর করে দেয়া হয়েছে।’