মাত্র ৬ ঘণ্টায় সিলেটের রাজপথে ৬ লাশ
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ সিলেটের সড়ক-মহাসড়কে যেন লাশের মিছিল! ১০ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মাত্র ৬ ঘণ্টায় সড়কে প্রাণ গেছে ৬ জনের। এরমধ্যে ৫ জন মারা গেছেন সড়ক দুর্ঘটনায়। আর অপরজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সংবাদদাতারা এসব তথ্য জানিয়েছেন।সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ গেল অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য নয়ন মিয়ার। তিনি উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত নুরুল আমিনের ছেলে। ১০ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেল ৪টায় উপজেলার দোয়ারাবাজার-বোগলাবাজার সড়কের মোল্লাপাড়া পয়েন্টে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।নয়ন মিয়া স্থানীয় বোগলাবাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পিছন থেকে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। গুরুতর অবস্থায় সেখান থেকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে পাঠানো হয়। পথিমধ্যে উপজেলা সদরের নৈনগাঁও গ্রামে পৌঁছামাত্র তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেল চালক ফজলুল করিমকে (২৩) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা। তিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাঙাপাড়া গ্রামের আব্দুস শহিদের ছেলে। দোয়ারাবাজার থানার ওসি বদরুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।সিলেট নগরির এয়ারপোর্ট থানাধীন ফাজিল চিশত এলাকার ফুটপাত থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১০ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেল ৫টার দিকে ফাজিল চিশতের স্যামসাং শো-রুমের সামনে থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মৃত ব্যক্তির নাম উত্তম। তিনি সিলেটের জালালবাদ থানর করেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বলে জানা গেছে।স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।এয়ারপোর্ট থানার ওসি মইন উদ্দিন শিপন লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। তবু মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হতে লাশের ময়না তদন্ত করা হবে।সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের চারখাই এলাকায় ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ফখরুল ইসলাম (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর রোববার রাত ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সিলেটের ওসমানীনগরের তাজপুরে প্রাইভেট কারচাপায় মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের তাজপুর এলাকার ইলাশপুরস্থ ভার্ড চক্ষু হাসপাতালের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।নিহতরা হলেন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার এলাকার শুক্কুর আলীর স্ত্রী সালমা বেগম (৫২) ও তার ছেলে আব্দুল কাইয়ুম (৩২)। তারা ভার্ড চক্ষু হাসপাতালের পাশে একটি বাসায় ভাড়াটে থাকতেন। ঘটনার সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে তারা বেপরোয়া গতির প্রাইভেট কারের নিচে চাপা পড়েন।প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো গ- ২৯-০৫৫) রাত সাড়ে আটটার দিকে ভার্ড চক্ষু হাসপাতালের সামনে গেলে মহাসড়ক পার হতে থাকা সালমা ও তার ছেলেকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন। খবর পেয়ে তাজপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ দু’টি উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। দুর্ঘটনা ও নিহতের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ওসমানীনগর থানার এসআই সবিনয় বৈদ্য।হবিগঞ্জের ইকরাম আঞ্চলিক সড়কে যাত্রীবাহী ইজিবাইক উল্টে চান মিয়া (৫৫) নামে এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪ জন। তাদেরকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত চান মিয়া জেলার বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে।স্থানীয়রা জানান, শহরের আলমবাজার থেকে একটি ইজিবাইক যাত্রী নিয়ে ইকরাম উত্তর সাঙ্গরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে ইজিবাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে যায়। এতে চান মিয়াসহ ৫ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়।স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চান মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বদিউজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।