মামুনুল হকের ফেইসবুক লাইভ: প্রমান হলো কোন ফোনালাপই ভূয়া নয়

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী 

ঢাকা: বৃহস্পতিবার নিজের ফেইসবুক পেজে লাইভ কথা বলার মাধ্যমে সম্প্রতি ফাস হওয়া তাঁর ও তাঁর কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলের প্রকাশিত ভিডিওবার্তা যে ভূয়া নয়, পরোক্ষভাবে তাই স্বীকার করলেন ‘নারী কেলেঙ্কারী’র দায়ে অভিযুক্ত হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক।

এই ফেইসবুক লাইভ বক্তব্যের মাধ্যমে সোনারগাঁও রয়্যাল রিসোর্টের ঘটনার পর তাঁর স্ত্রীর সাথে ‘মাঝখান থেকে তুমি আবার অন্য কিছু মনে করোনা’খ্যাত ফোনালাপ এবং মিডিয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলের অভিযোগ নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছিলো তা অনেকটা দুর হয়েছে। এই ফোনালাপগুলো যে ভূয়া নয়, সঠিক, লাইভে সেটিই তিনি নিজে  স্বীকার করলেন। শুধু তাই নয়,  সমালোচকরা বলছেন, ‘ইসলামী শরিয়ায় বলা আছে- স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে, খুশি করতে সীমিত পরিসরে সত্যকে গোপন করার অবকাশ রয়েছে।’ এমন মন্তব্য করে নিজের স্বার্থে পবীত্র ইসলামকে ব্যবহারের যে অভিযোগ উঠে তাঁর বিরুদ্ধে, নিজের অজান্তেই লাইভ বক্তব্যে তাও সঠিক বলে প্রমান দিলেন মামুনুল হক।

লাইভ বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘আমি একাধিক বিয়ে করার ক্ষেত্রে আমার স্ত্রীকে কীভাবে ম্যানেজ করবো, তার সঙ্গে আমি কোন পরিস্থিতিতে কোন কথা বলে সান্ত্বনা দেবো সেটি আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। 

ইসলামি শরিয়তে এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। স্ত্রীকে খুশি করার জন্য প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে সত্যকে গোপন করারও অবকাশ রয়েছে। কাজেই সে বিষয়ে যদি কোনো অভিযোগ থেকে থাকে সেটি থাকবে একান্ত স্ত্রীর।’

সোনারগাঁও রয়্যাল রিসোর্টের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে নিজের ফেসবুক পেজে লাইভে তিনি বলেন, আমি একাধিক বিয়ে করেছি। ইসলামি শরিয়তে একজন মুসলিম পুরুষকে চারটি বিয়ে করার অনুমতি দিয়েছে। দেশের প্রচলিত আইনেও কোনো বাধা নেই।

কাজেই আমি যদি চারটি বিয়ে করি তাতে কার কী। আমি একাধিক বিয়ে করেছি সেটি আমার শরিয়তসম্মত ও নাগরিক অধিকার।

যদি একাধিক বিবাহের ওপর কোনো আপত্তি থাকে সেটি থাকবে আমার পরিবারের, আমার স্ত্রীদের। আমি একাধিক বিয়ে করে যদি আমার স্ত্রীদের কোনো অধিকার বঞ্চিত করে থাকি তাহলে তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ কি দেখাতে পারবে যে আমার কোনো স্ত্রী কোথাও এতটুকু অভিযোগ করেছে, আমি তাদের তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছি?

সুতরাং আমার স্ত্রীদের অধিকার নিয়ে তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে, আমার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কী ধরনের হবে কোন স্ত্রীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে পরিধি কতটুকু জানাবো, কতটুকু জানাবো না সেটি সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত এখতিয়ার। আমার ব্যক্তিগত এখতিয়ারকে লঙ্ঘন করে যারা আমার ব্যাপারে কোনো আক্রমণাত্মক আচরণ করেছেন, আমি মনে করি তারা আমার ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছেন এবং আমার নাগরিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করেছেন। ’

 

হেফাজত নেতা বলেন, আমার স্ত্রীদের সঙ্গে আমার ফোনালাপ একান্তই আমার ব্যক্তিগত বিষয়, পারিবারিক বিষয়। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, আমার সেই ব্যক্তিগত গোপনীয় বিষয়কে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমি আমার ব্যক্তিগত আইন পরামর্শদাতাদের সঙ্গে পরামর্শ শুরু করেছি। অচিরেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’

তিনি বলেন, ‘সেদিন নারায়ণগঞ্জের রয়্যাল রিসোর্টে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে যে আমি কেন এই পরিস্থিতিতে রিসোর্টে গেলাম। হ্যাঁ, আমি স্বীকার করছি যে এমন অসাবধানতাবশত সেখানে আমার যাওয়া সমীচীন হয়নি। তবে আমি জানতাম না যে দেশের মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে।’

মামুনুল আরো বলেন, এই যে এতগুলো ফোনালাপ ফাঁস করা হলো, তাতে কি প্রমাণ মিলেছে যে সে আমার বিবাহিতা স্ত্রী নয়? অথচ শুধু শুধু আমার একান্ত ব্যক্তিগত কথাগুলো কোন উদ্দেশ্যে ফাঁস করা হলো?

জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমানের ভিডিও বার্তার কথা উল্লেখ করে মামুনুল হক অভিযোগ করেন, তাকে জোড়পূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে নাকি স্ক্রিপ্ট সামনে দিয়ে এই ভিডিওবার্তা রেকর্ড করা হয়েছে।

You might also like