মিয়ানমারে সেনা-গেরিলা সংঘর্ষ, ভারতে শরণার্থীর ঢল

আন্তজার্তিক ডেস্ক
সত্যবাণী

মিয়ানমার: মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীদের সঙ্গে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে সেনাবাহিনীর। সংকটময় পরিস্থিতি থেকে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে এরই মধ্যে পালিয়ে গেছেন প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সীমান্তবর্তী থান্টলং শহরের বাসিন্দারা।ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, হাতেগোনা কিছু সংখ্যক সরকারি কর্মকর্তা, একটি এতিমখানার কিছু শিশু আর অভিযানরত সামরিক সদস্যরা ছাড়া শহরটিতে আর কেউ অবশিষ্ট নেই। এদের মধ্যে বহু লোক আবার সীমান্ত পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি, মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় চিন রাজ্যের সীমান্তবর্তী শহরের নাম থান্টলং। সেখানে আনুমানিক ১০ হাজার মানুষ বসবাস করতেন। যদিও এখন প্রায় জনশূন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা শহর।

গেল ১ ফেব্রুয়ারি বিতর্কিত সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। মূলত এরপর থেকেই বিক্ষোভ-সহিংসতা লেগে রয়েছে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মাঝে।চলতি সপ্তাহে থান্টলংয়ে সংঘর্ষের সময় অন্তত ২০টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় মিডিয়ার খবর, একটি বাড়ির আগুন নেভানোর চেষ্টা করায় এক খ্রিস্টান যাজককে গুলি করে হত্যা করে সেনা সদস্যরা।যদিও সামরিক বাহিনীর দাবি, তাদের ওপর শতাধিক ‘সন্ত্রাসী’ আক্রমণ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। আর এতেই ওই যাজক প্রাণ হারান।সালাই থাং নামে স্থানীয় এক সম্প্রদায় নেতা জানান, গেল কয়েক সপ্তাহে শহরটিতে সেনা-বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত চার বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারান। এতে গুরুতর আহত হন আর ১৫ জন। জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী চিন ডিফেন্স ফোর্সের তথ্য মতে, তাদের হামলায় অন্তত ৩০ সৈন্য প্রাণ হারিয়েছেন।

সালাই থাং অভিযোগ করে বলেন, সামরিক বাহিনী থান্টলং শহরের বাড়িঘরে প্রবেশ করে গুলি চালাতে শুরু করেছিল। এতে স্থানীয় লোকজন পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।এ দিকে বার্মিজ সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্য মিজোরামের একটি নাগরিক সংগঠনের প্রধান জানিয়েছেন, গেল এক সপ্তাহে পাশের দেশটি থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ পালিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।অপর দিকে অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স নামে মিয়ানমারভিত্তিক একটি সংগঠনের তথ্য বলছে, মিয়ানমারে গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ-সহিংসতা নারী-শিশুসহ প্রায় এক হাজারের অধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া গ্রেফতার হয়েছেন আরও ছয় হাজারেরও বেশি লোক।

You might also like