মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মের প্রতি
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: মহান বিজয় উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের ইম্প্রেশন ইভেন্ট হলে বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন আয়োজিত এক বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা ও জাতীয় চার নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, “জাতির পিতা একটি প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, সমৃদ্ধ, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করছেন।”
হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে এবং বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে রূপান্তর করার অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
হাইকমিশনার মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসে বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে বাঙ্গালীদের অনন্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ব্রিটিশ এমপি ও হাউস অব কমন্স-এ সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের সভাপতি রুশনারা আলী শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর গভীর ও সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অব্যাহত থাকবে।
যুক্তরাজ্যে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃতে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ থেকে অনেক দেশ নানা ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা অর্জন করতে পারে।
আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেন ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব নঈম উদ্দিন রিয়াজ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের বীর মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী মাহমুদুর রহমান বেনুকে বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে। শিল্পী মাহমুদুর রহমান তাঁকে বিশেষ সম্মাননা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর গাওয়া কয়েকটি গান গেয়ে সবাইকে আবারো অভিভূত করেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনার অতিথি ও মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনাদের স্মরণে ‘Our Galant Women of 1971-A Tribute’ শীর্ষক এক বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন এবং প্রতীকী স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এরপর ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পর বঙ্গবন্ধু ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসর্গ করে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ কমিউনিটির শিল্পীদের একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সবাইকে মুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা, কূটনীতিক এবং রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির সর্বস্তরের ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহন করেন।
সকালে হাইকমিশনার মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার, শহিদ বুদ্ধিজীবী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এর আগে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম সকালে হাই কমিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে হাই কমিশনার মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। হাইকমিশনার তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বীরঙ্গনা ও জাতীয় চার নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, “জাতির পিতা একটি প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, সমৃদ্ধ, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করছেন।“
হাই কমিশনার ব্রিটিশ-বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মের মধ্যে জাতির পিতার আদর্শ এবং স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক প্রচেস্টা ও উদ্যোগে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের যার যার অবস্থান থেকে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
হাই কমিশনার মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসে বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে বাঙ্গালীদের অনন্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।