মুজিববর্ষ জাতীয় জন্ম নিবন্ধন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের প্রতি হাইকমিশনারের জন্ম নিবন্ধনের আহবান
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ মুজিববর্ষ জাতীয় জন্মনিবন্ধন দিবস ২০২০ উপলক্ষ্যে আজ বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনাতাসনীম প্রবাসীব্ রিটিশ-বাংলাদেশিদের বিশেষ করে তাদের নতুন প্রজন্মকে লন্ডন হাইকমিশনের মাধ্যমে জন্মনিবন্ধনের আহবান জানান।
হাইকমিশনার জন্মনিবন্ধনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন,জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে প্রবাসীরা দ্বৈত নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের পাসপোর্ট,নাগরিকত্বের কার্ড তথা এনআইডি ও বিদেশী নাগরিকত্ব সহ ৬টি অত্যাবশ্যকীয় সেবা পেতে পারেন।এছাড়া বাংলাদেশে ১৬টি নাগরিক সুবিধা পাওয়ার জন্য ও জন্মনিবন্ধন আবশ্যক।
তিনি আগামী ২০২১ সালে মুজিববর্ষের চূড়ান্ত পর্ব ও বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের সময় যুক্তরাজ্য প্রবাসী অধিকাংশ বাংলাদেশি নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করার আশা প্রকাশ করে এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।এই বিশেষ ওয়ে বিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের বার্থ এন্ড ডেথ অফিসের রেজিস্টার জেনারেল মানিক লাল বণিক।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড-এবসবাসকারি প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, পেশাজীবী ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, চেম্বার ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সহ সর্বস্তরের প্রবাসীরা জন্ম নিবন্ধন বিষয়ে তাঁদের অভিমত ও পরামর্শ দেন। এদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট প্রবীণ নেতা ও যুক্তরাজ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ,বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা ও সমাজসেবী এবং উদ্যোক্তা আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ হাসানএম.বি.ই., বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি হরমুজ আলী, বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুনিম, বিশিষ্টব্রিটিশ-বাংলাদেশিসাংবাদিকসৈয়দ নাহাসপাশা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ঊর্মী মাযহার ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ইউরোপ)-এর সাধারণ সম্পাদক আনছার আহমদ উল্লাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনার ২০২১ সালের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অনুযায়ী তাঁরই নির্দেশে ২০১০ সাল থেকেই অন-লাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১৭সালে জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত অতীতের সব নীতিমালার সমন্বয় করে একটি যুগোপযোগী ও আধুনিক নীতি মালা প্রণয়ন করা হয়েছে।তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্ম নিবন্ধনের ও পরবিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেন, প্রবাসীরা জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাতীয় পরিচয় পত্র গ্রহণ করলেই তারা বাংলাদেশের পাসপোর্ট পাবেন এবং বাংলাদেশে তাদের উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। এছাড়া বাংলাদেশে ব্যাংক হিসাব খোলাসহ বিভিন্ন আর্থিক কর্মকান্ডে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন যা জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমেই পাওয়া যায়।
বার্থ এন্ড ডেথ অফিসের রেজিস্টার জেনারেল মানিক লাল বণিক বলেন, ২০১০ সাল থেকেই অন-লাইনের মাধ্যমে সারা দেশের সিটি কাউন্সিল, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায় থেকে অন-লাইনে জন্ম নিবন্ধন করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্ম নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে।তিনি জানান, বর্তমান আইন অনুযায়ী জন্ম নিবন্ধন করাবা ধ্যতামূলক এবং জন্ম নিবন্ধন ছাড়া পাসপোর্ট, এন আইডি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, টিআইএন নম্বরসহ ১৬টি নাগরিক সুবিধা পাওয়া যাবে না।
প্রবাসী ব্রিটিশ-বাংলাদেশিকমিউনিটিরবিশিষ্টপ্রবীণ নেতাসুলতানমাহমুদ শরীফবাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধনের নিয়ম-নীতি ও প্রক্রিয়াকে আধুনিক ও যুগোপযোগী উল্লেখ করে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে মায়ের নাম অন্তর্ভূক্ত করাকে বাধ্যতা মূলক করে বিশ্বে এক অনুসরণীয় নজীর স্থাপন করেছেন।
প্রবাসী ব্রিটিশ-বাংলাদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্যতম প্রধান নিয়ামক জন্ম নিবন্ধনের নিয়ম-নীতি ও এর প্রক্রিয়ার আধুনিকায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিগভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেনএবং কভিড মহামারীর মধ্যে ও অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অনেক বেশী অর্জিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর অতুলনীয় নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ গ্রহণ করে জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে বিস্তারিত জানতে চান। সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ এসব প্রশ্নের জবাবে দেন।অনুষ্ঠানের শুরুতে স্থানীয় সরকার পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ নির্মিত জন্ম নিবন্ধনের ওপর একটি বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।