যাবজ্জীবন সাজা কত বছর, জানা যাবে ১ ডিসেম্বর
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস বিষয়ে অভিমত দিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আনা আবেদনের ওপর আগামী ১ ডিসেম্বর রায়ের তারিখ ধার্য করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।এক আসামির আনা পুনর্বিবেচনার আবেদনের (রিভিউ) পুনঃশুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের ভার্চুয়াল পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ রায়ের জন্য এই তারিখ ধার্য করেন।আদালতে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী শিশির মনির।
গত বছরের ১১ এপ্রিল এ মামলায় চারজন এমিকাস কিউরি (আদালতকে আইনি সহায়তাকারী) নিয়োগ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। পরে তারা তাদের মতামত তুলে ধরেন।এমিকাস কিউরিরা ছিলেন- সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, এএফ হাসান আরিফ, আব্দুর রেজাক খান ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন। পরে এ এম আমিন উদ্দিন এটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।২০০১ সালে সাভারে জামান নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে ২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। দুই আসামি হলেন আতাউর মৃধা ও আনোয়ার হোসেন।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। অন্যদিকে তাঁদের মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি শেষে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট দুই আসামির মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে রায় দেন।হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধ আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেয়া হয়। একই সঙ্গে আপিল বিভাগ যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাসসহ ৭ দফা অভিমত দেন। আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আসামি আতাউর মৃধা আবেদন করেন।গত বছরের ১১ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে শুনানি শেষে বিষয়টি সিএভি (রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ) রাখেন।
তখন রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রয়াত এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর বর্তমান এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এমিকাস কিউরি হিসেবে মত দেন।শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, যাবজ্জীবন সাজার একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকতে হবে। আমাদের আইনে যাবজ্জীবন কারাদন্ড হিসেবে ৩০ বছর বলা আছে। যা রেয়াত পাওয়ার পর সাড়ে ২২ বছর হয়। উন্নত বিশ্বেও সাজার মেয়াদ বলে দেয়া হয়। সেখানে প্যারোল ব্যবস্থাও রয়েছে। ফলে দীর্ঘ মেয়াদে কারাদন্ড প্রাপ্তদের দীর্ঘদিন কারাগারে থাকতে হয় না। কিন্তু আমাদের দেশে সে ব্যবস্থা নেই। তাই যাবজ্জীবন হিসেবে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া হলে কারাগারগুলো বৃদ্ধাশ্রম হয়ে যাবে।আজ ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ কি-না এ রায় জানা যাবে ১ ডিসেম্বর।