যুক্তরাজ্যের হোম সেক্রেটারীর বিরুদ্ধে দন্ডিত যুদ্ধপরাধী চৌধুরী মঈনুদ্দিনের মামলা
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: যুক্তরাজ্যের হোম সেক্রেটারী (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) প্রীতি প্যাটেলের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে যুদ্ধপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশের আদালতে দন্ডিত যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মঈনুদ্দিন। খবর ডেইলী মেইলের।
গত বছর হোম অফিসের কমিশন ফর কাউন্টারিং এক্সট্রিমিজমের ‘চ্যালেন্জিং হেইটফুল এক্সট্রিমিজম’ শীর্ষক রিপোর্ট হোম অফিসের টুইটার একাউন্টে প্রকাশ করার পর হোম সেক্রেটারী প্রীতি প্যাটেল তা রিটুইট করায় চৌধুরী মঈনুদ্দিন এই মামলা করেন। মামলার আর্জিতে মানহানির ক্ষতিপুরন হিসেবে তিনি ৬০ হাজার পাউন্ড দাবি করেছেন ব্রিটিশ হোম সেক্রেটারীর কাছে। ‘চ্যালেন্জিং হেইটফুল এক্সট্রিমিজম’ শীর্ষক ঐ রিপোর্টে চৌধুরী মঈনুদ্দিনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জন্মলগ্নে যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগের কথা উল্লেখ ছিলো। ১৯৭১ এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতাপন্থী নেতাকর্মীদের হত্যার সাথে তাঁর যোগসূত্র থাকার অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকারকারী চৌধুরী মঈন উদ্দিন, অভিযোগ করেছেন যে গত বছরের হোম অফিসের এই রিপোর্টে তার মানহানি হয়েছে।
নর্থ লন্ডনে বসবাসকারী চৌধুরী মঈন উদ্দিন চার সন্তানের জনক। তার দাবি, তিনি কোনো যুদ্ধাপরাধ করেননি। এছাড়া ১৯৭১ সালের সহিংসতায় জড়িতদের সঙ্গে তার কোনো যোগসূত্র নেই। তিনি আরো দাবি করেন, জামায়াতে ইসলামির বৃটিশ শাখার কোনো নেতৃত্বের সঙ্গেও তার কোন যোগসূত্র নেই। তিনি আরো দাবি করেন, জামায়াতে ইসলামীর কোনো সিনিয়র নেতা তিনি কখনও ছিলেন না।
সাত বছর আগে তাঁর অনুপস্থিতিতে চৌধুরী মঈন উদ্দিনকে মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়। বলা হয়, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি একটি মিলিশিয়ার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ১৮জন বুদ্ধিজীবী হত্যায়। এ অপরাধে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ফাঁসি দন্ড ঘোষণা করেন। তবে চৌধুরী মঈন উদ্দিন এই আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সমালোচনা, নিন্দা আছে বলে উল্লেখ করেন।
মেইল অন সানডে রিপোর্ট করে যে, ২০১২ সালে চৌধুরী মঈন উদ্দিন বৃটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবায় একজন সিনিয়র হিসেবে ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাভিত্তিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি। চৌধুরী মঈন উদ্দিনের রিট গত মাসে হাইকোর্টে জমা দেয়া হয়েছে।
তাতে দাবি করা হয়েছে, চ্যালেঞ্জিং হেটফুল এক্সট্রিমিজম রিপোর্ট ইউরোপীয়ান প্রটেকশন রেগুলেশন লঙ্ঘন করেছে। একই সঙ্গে তার ব্যক্তিগত তথ্য বেআইনিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই রিপোর্টটি প্রকৃতপক্ষে প্রকাশিত হয় গত বছর অক্টোবরে। কমিশন প্রাথমিকভাবে মঈন উদ্দিনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করার পর ২০ শে মার্চ পর্যন্ত তা সরকারের ওয়েবসাইটে ছিল। পরে এ থেকে তার রেফারেন্স সরিয়ে দেয়া হয়। মুছে ফেলা হয় তার ব্যক্তিগত তথ্য।
ডেইলি মেইল আরো লিখেছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দেশ ছাড়েন মঈন উদ্দিন এবং বৃটেনে এসে বৃটিশ নাগরিকত্ব পান। তিনি দাবি করেছেন, প্রকাশিত ওই রিপোর্ট তাকে মারাত্মক হতাশাগ্রস্ত করেছে। বিব্রত করেছে। এই অভিযোগ প্রকাশের আগে তার সঙ্গে কমিশন যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে তার দাবি। তিনি আরো বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর আইনজীবীরা যখন তাকে লিখেছেন, তখন তিনি আরেক দফা দুর্ভোগে পড়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট কমিশন ফর কাউন্টার এক্সট্রিমিজম প্রকাশিত একটি রিপোর্টের সঙ্গে এসব বিষয় সংশ্লিষ্ট। কমিশনের স্পন্সর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হলেও, আমরা এখন মন্তব্য করতে পারছি না যে, আইনি প্রক্রিয়া চলমান কিনা।