আদালতের রায়ঃ আইনি লড়াইয়ের জন্য ব্রিটেন ফিরতে পারবেন শামীমা
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত আইএস বধু শামীমা বেগমকে সরকারের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই পরিচালনার জন্য ব্রিটেন ফিরতে দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার লন্ডনের একটি আপিল আদালত এমন রায় দেয়। আদালতের রায়ে বলা হয়, সিরিয়ায় শরণার্থী শিবিরে থেকে নিজের মামলা লড়তে পারছেননা বলেই শামীমা ন্যায্য শুনানী থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাকে ন্যায্য শুনানীর সুযোগ দেয়া উচিত।
আপিল আদালতের এই রায়ের পর এখন বৃিটিশ সরকারকে শামীমাকে লন্ডনের আদালতে উপস্থিত করানোর উপায় বের করতে হবে। এর আগে একাধিকবার তার বৃিটেন ফেরার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।
আপিল আদালতের এই রায়কে হতাশাব্যন্জক মন্তব্য করে ব্রিটেনের হোম অফিস বলেছে, তারা এর বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চাইবে।
শামীমার আইনজীবী ড্যানয়েল ফার্নার আদালতের রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় জানান, তার মক্কেল ব্রিটিশ বিচার ব্যবস্থাকে ভয় নয়, শ্রদ্ধা করেন। আদালতের যেকোন সিদ্ধান্তকে তিনি স্বাগত জানান, এমন মন্তব্য করে শামীমার আইনজীবী বলেন, ‘তার মানে এই নয় যে, কাউকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যায্য সুযোগ না দিয়ে নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করা হবে, যা শামীমার বেলায় করা হয়েছে’। তিনি বলেন শামীমা এক্ষেত্রে ন্যায় বিচার পাননি।
আদালত শুনানীতে শামীমার আইনজীবী ড্যানয়েল ফার্নার জানান, তার মক্কেলকে দেশে ফিরতে না দেয়ায় সিরিয়ায় শরণার্থী শিবিরে থেকে কার্যকরভাবে সরকারের সিদ্ধান্তের আইনী মোকাবিলা করতে পারছেন না তিনি। শামীমার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে বলা হয়, তার নাগরিকত্ব প্রত্যাহার অবৈধ এই কারণে যে, এতে তিনি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, কোনো ব্যক্তির যদি দ্বিতীয় কোনো দেশের নাগরিকত্ব না থাকে, তবে তার নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেয়া যায়না।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের সঙ্গে যোগ দিতে লন্ডন থেকে সিরিয়া যান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই বৃটিশ তরুণী। ২০১৯ সালে সিরিয়ায় একটি শরণার্থী শিবিরে তার সন্ধান পাওয়া যায়। সে সময় নিজের নাগরিকত্ব রক্ষা নিয়ে আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা লড়তে দেশে ফিরতে চাইলে তার নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করে নেয় বৃটিশ হোম অফিস।
হোম অফিস বিভিন্ন সময় শামীমাকে বাংলাদেশী অরিজিন উল্লেখ করে নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করলেও সে রাষ্ট্রবিহীন হবেনা এমন ইঙ্গিত করে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ সরকার কোনভাবেই শামীমাকে তার দেশে ঢুকতে দেবেনা এই কারনে যে, শামীমা কখনও বাংলাদেশের নাগরিক ছিলোনা, এমন কি নাগরিকত্বের জন্য কখনও আবেদনও করেনি।