যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেন হামলার পরিকল্পনা ফাঁস

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

যুক্তরাষ্ট্র: সম্প্রতি ইয়েমেনে সামরিক হামলার পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি গোপন আলোচনা ফাঁস হয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর হোয়াইট হাউস ভুল স্বীকার করেছে।এনক্রিপ্টেড চ্যাট অ্যাপ ‘সিগনাল’ থেকে একটি আলোচনার তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। ঘটনাটি নজরে এসেছে সাংবাদিক জেফরি গোল্ডবার্গের।মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ এ তথ্য জানায়।প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সম্প্রতি ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের ওপর হামলা পরিচালনা সমন্বয়ের জন্য খোলা একটা সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রুপে এক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিককে যুক্ত করেছিলেন। ওই সাংবাদিক ভুলক্রমে ব্যক্তিগত সিগন্যাল গ্রুপ চ্যাটে যুক্ত হয়েছিলেন। ওই গ্রুপে শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারা ইয়েমেনে সামরিক হামলার সমন্বয় করছিলেন।

গ্রুপটিতে আছেন—প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং অন্যরা।এই গ্রুপে হামলার সময়সূচি, লক্ষ্যবস্তু এবং অস্ত্রের প্যাকেজ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। অথচ, বিষয়গুলো ক্লাসিফায়েড সরকারি ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধ থাকার কথা।‘হুতি পিসি স্মল গ্রুপ’ নামের গ্রুপ চ্যাটটিতে ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা দলের মূল সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে গত ১৫ মার্চ যখন ইয়েমেনের হুথি টার্গেটে মার্কিন হামলা শুরু হয়, তখন চ্যাট গ্রুপে ওয়াল্টজ লিখেন, ‘অসাধারণ কাজ!’ এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা, একটি মুষ্টিবদ্ধ হাত ও আগুনের ইমোজি পাঠান। অন্য কর্মকর্তারাও এতে সাড়া দেন।

কিন্তু এই সাফল্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন বহিরাগত এ ধরনের সংবেদনশীল চ্যাটে অনুপ্রবেশ করতে পারলে তা প্রশাসনের বড় ব্যর্থতা। আরও আশঙ্কার বিষয়, এ ধরনের আলোচনার জন্য সরকার নির্ধারিত সুরক্ষিত যোগাযোগ চ্যানেল ব্যবহার করা হয়নি, যা গুপ্তচরবৃত্তি আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট মার্ক ওয়ার্নার বলেন, ‘এই প্রশাসন গোপন তথ্য ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বহীন আচরণ করছে, যা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান ক্রিস ডেলুজিও হাউস আর্মড সার্ভিসেস কমিটিতে তদন্ত দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি গুরুতর নিরাপত্তা লঙ্ঘন, এবং দায়িত্বশীলদের জবাবদিহি করতে হবে।এ বিষয়ে রিপাবলিকান নেতারাও সমালোচনা করেছেন। কংগ্রেসম্যান ডন বেকন বলেন, ‘এ ধরনের তথ্য অনিরাপদ প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা উচিত হয়নি। রাশিয়া ও চীন অবশ্যই এসব মনিটর করছে।এদিকে, ট্রাম্প এই বিষয়ে অজ্ঞতার ভান করেছেন। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি এই খবরের বিষয়ে কিছু জানতাম না।ভুলের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজ। কীভাবে নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত না থাকা এক ব্যক্তির নাম্বার ওই গ্রুপে যুক্ত হয়েছে তা পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।তবে হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জাতীয় নিরাপত্তা টিম ও মাইকেল ওয়াল্টজের পক্ষে সাফাই গেয়েছে।কিন্তু ওয়াশিংটনে গুঞ্জন রয়েছে, এ ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ে পদত্যাগ আসতে পারে।সংবাদমাধ্যম দ্য আটলান্টিকের সাংবাদিকের গ্রুপে যুক্ত হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত ছিল। গ্রুপে যুক্ত হওয়ার পর এবং হামলার আগে বা পরেও তাকে গ্রুপের কোনো সদস্য গ্রুপ থেকে বের করে দেননি বা তিনি কীভাবে যুক্ত হয়েছেন সে বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হননি।

You might also like