‘রাষ্ট্রপতি হতে রাজি হননি আনিসুজ্জামান’
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী: সদ্যপ্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভারতের বাঙালি কবি বীথি চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন,বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার প্রস্তাব পেয়েও তাতে রাজি হননি আনিসুজ্জামান।শনিবার ভারতীয় গণমাধ্যমে আজকাল-এ স্মৃতিচারণমূলক এক লেখায় এসব কথা বলেন বীথি।তিনি বলেন, আনিসুজ্জামানের প্রয়াণে বাঙালির চিন্তা ভাবনার জগতে একটা বড় শূন্যতা তৈরি হলো।বীথি বলেন, ড. আনিসুজ্জামান এত বড় পণ্ডিত মানুষ ছিলেন, কিন্তু খুব সহজ, সরল, অনাড়ম্বর স্বভাব ছিল তার। কঠিন বিষয়কে সহজ করে বলতে পারতেন তিনি।তবে তার কথায় বেশিরভাগ থাকত তীক্ষ্ণ রসবোধ।আনিসদা’ সম্বোধন করে বীথি জানান, ড. আনিসুজ্জামানের সঙ্গে তার বহু বছরের যোগাযোগ ছিল। তিনি ছিলেন পারফেকশনিস্ট।
বীথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একবার ড. আনিসুজ্জামানকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি রাষ্ট্রপতি হতে সম্মত হননি। এ নিয়ে কলকাতার এক সাহিত্য আড্ডায় আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কেন রাজি হলেন না?’ প্রশ্ন শুনে উনি একটু চুপ করে রইলেন। তার হয়ে পাশ থেকে একজন জবাব দিলেন, ‘আসলে আনিসদা কোনও সাতেপাঁচে থাকেন না। উনি এসবে রাজি হবেনই বা কেন?’ ড. আনিসুজ্জামান তখন বলেছিলেন, ‘না তুমি ঠিক বলছ না, সাতেপাঁচে আমি খুবই থাকি। সাতেপাঁচে থাকাই তো আমার কাজ। ঘটনা হলো রাষ্ট্রপতি হয়ে গেলে তো আর এতো সাতেপাঁচে থাকতে পারব না। তাই রাজি হইনি।’ তিনি বলেছিলেন, প্রোটোকলের মধ্যে তিনি থাকতে পারেন না। নিজের মালিক নিজে থাকবেন সারাজীবন।কবি বীথি বলেন, এই ছিলেন আনিসদা। যিনি সাতেপাঁচে থাকার জন্য রাষ্ট্রপতি হতে চাননি। এইরকম অনেক স্মৃতিই মনে পড়ছে। এরপর ঢাকায় গেলে শহরটাকে খুব ফাঁকা লাগবে মনে হয়।
প্রসঙ্গত, বাঙালি জাতির বাতিঘর জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ৮৩ বছর বয়সে বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।