রিসোর্ট থেকে মামুনুল হককে ছাড়িয়ে নিলেন হেফাজত কর্মীরা

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে নারীসহ বেড়াতে গিয়ে শনিবার বিকেলরে স্থানীয় জনগণের তোপের মুখে পড়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক। সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে হেফাজতের একদল নেতা–কর্মী, মাদ্রাসাছাত্র মিছিল নিয়ে এসে রয়েল রিসোর্ট নামের ওই অবকাশযাপন কেন্দ্রটিতে ভাঙচুর চালিয়ে মামুনুলকে ছিনিয়ে স্থানীয় একটি মসজিদে নিয়ে যায়। তখন মামুনুলকে কক্ষের ভেতর জিজ্ঞাসাবাদ করছিল পুলিশ।নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদসহ সোনারাগাঁ থানার কর্মকর্তারা তখন সেখানেই ছিলেন। মামুনুলকে ছিনিয়ে বিপুল সংখ্যক হেফাজত নেতা-কর্মীকে মিছিল নিয়ে মোগড়াপাড়ার দিকে যেতে দেখা যায়। পরে রাত ৮টার দিকে তার সমর্থকরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে।

এর আগে শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় রয়াল রিসোর্টের ৫ম তালার ৫০১ নম্বর কক্ষে মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। মামুনুল হকের দাবি, সঙ্গে থাকা নারী নাম আমিনা তৈয়ব। দুই বছর আগে তাকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেছেন। আমিনাকে সঙ্গে নিয়ে রিসোর্টে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি।

রাত সাড়ে আটটার দিকে সোনারগাঁও উপজেলার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, ‘হুজুর (মামুনুল) ঢাকায় চলে যাচ্ছেন। আপনারা সবাই শান্ত হয়ে যার যার বাড়িতে ফিরে যান।’এমন ঘোষণার পর পরিবেশ একটু শান্ত হয়েছে। তবে লাঠিহাতে একটি মিছিল মেঘনার দিকে যেতে দেখা যায়।এর আগে হেফাজতের কর্মীরা পুলিশের দুটি গাড়ি ও অন্তত দুটি বাস ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।তবে বিষয়টি ষড়যন্ত্র কিনা, তা খতিয়ে দেখছে তার দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই মাওলানা মামুনুল হকসহ হেফাজতের নেতাদের বিষয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নানামুখী এই ষড়যন্ত্রের মধ্যে আজকের এই ঘটনাটিও ষড়যন্ত্র কিনা, আমরা দলীয়ভাবে তা খতিয়ে দেখবো। ঘটনাটি আমরা মাত্র কয়েক মিনিট আগে শুনেছি, আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বশীলরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।’

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ ‍সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানাধীন রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে এক নারীসহ অবস্থান করছেন- এমন খবরে স্থানীয় লোকজন রিসোর্ট ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। মামুনুল হক পুলিশকে জানিয়েছেন সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। পরে পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার করেছে।

এদিকে মামুনুলকে ঘেরাওয়ের খবরে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ‘রয়েল রিসোর্ট’ নামে ওই অবকাশ যাপনকেন্দ্রটিতে যান। সেখানে মামুনুল সংবাদকর্মীদের বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে অবকাশ যাপনে তিনি ওই রিসোর্টে যান। সেখানে তাকে হেনস্তা করা হয়েছে।মামুনুল বলেন, ‘মাস্তান প্রকৃতির লোকেরা এসে আমাকে আমার ওয়াইফসহ নাজেহাল করেছে। আমাকে আক্রমণ করেছে।’সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শনিবার দুপুরে স্ত্রীকে নিয়ে সোনারগাঁয়ে যাই। জাদুঘর ঘুরে দেখে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য এখানে (রিসোর্টে) আসি।’মামুনুল বলেন, ‘আমার বক্তব্য পরিষ্কার, আমরা এখানে একটু রিফ্রেশমেন্টের জন্য এসেছিলাম।…এখানে অনেক উচ্ছৃঙ্খল লোক এসেছে। আপনারা দেখেছেন। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’স্থানীয় আলেমদের কাউকে জানিয়ে তিনি এখানে এসেছেন কি না, জানতে চাইলে মামুনুল বলেন, ‘না, আমি জানাইনি। যেখানে যাই মানুষজন ভিড় করে। এ জন্য আমি একটু আলাদা করে এসেছিলাম।’

You might also like