রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে: ইইউ
নিউজডেস্ক
সত্যবাণী
বাংলাদেশঃ বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেনসিয়ে তেরিঙ্ক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় তাদের নিজভূমি মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে আজ বলেছেন,রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের লক্ষ্যে সকল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসাথে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।তিনি আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে গোটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।’
বুধবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন-ডিক্যাব সদস্যদের সাথে পাঁচটি ইউরোপীয় দেশের রাষ্ট্রদূতদের এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে ইইউ’র সীমিত সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়ন একাই মিয়ানমারের উপর চাপ বাড়াতে পারে না।চীন, ভারত ও আসিয়ান দেশগুলোর এই সংকট সমাধানে আরো বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করা উচিৎ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘(এই সংকট সমাধানে) এটি শুধু ইইউ’র দিকে আঙ্গুল তোলার বিষয় নয়, অন্য দেশগুলোর দিকে তাকান, তারা কোথায়, সকলের একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন,রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে কোফি আনান কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ইইউ এই সঙ্কটের সমাধানের জন্য সেই দিকনির্দেশনা অনুসরণ করছে।
বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় উল্লেখ করে তেরিঙ্ক বলেন,আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো।আরো বেশি কিছু করা যেতো এবং এ ব্যাপারে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।ইইউ’র প্রতিনিধি দলের প্রধান বলেন,ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই সংকট সমাধানের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনই এই সংকটের সবচেয়ে ভাল সমাধান বলে ইইউ বিশ্বাস করে।ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে ইইউ দূত দ্বীপটিতে জাতিসংঘের কারিগরি ও মানবিক সুরক্ষা টিমের পরিদর্শনের আগে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
মানবিক দিক বিবেচনা করে মিয়ানমারের বাস্তুুচ্যূত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ায় তেরিঙ্ক বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ইইউ রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি তাদের আশ্রয়দানকারী বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীর জন্যও তাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।বাংলাদেশ নিজভূমি থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় দিয়েছে। এদের অধিকাংশই ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কঠোর দমনপীড়ন শুরু করার পর প্রাণ বাঁচাতে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।ডেনমার্ক, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও সুইডেনের রাষ্ট্রদূতরা ‘ডি-ক্যাব টক’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। ডিক্যাবের প্রেসিডেন্ট আঙ্গুর নাহার মন্টি ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেনইইউ দূতগণ ইইউ-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক এবং অভিবাসন ইস্যুসহ ব্যাপক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।