লন্ডনে ১৯৩৬ সালের বর্ণবাদী দাঙ্গার ৮৫তম বার্ষিকীতে বর্ণবাদ বিরোধী সমাবেশ

মতিয়ার চৌধুরী
সত্যবাণী

লন্ডনঃ ‘‘নো টু রেসিজম‘‘, ‘‘নো টু ফ্যাসিজম‘‘, ‘‘ইউনাইট এ্যাগেইষ্ট দি ফার রাইট‘‘ , লিখা ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্থ থেকে শত শত মানুষ ১৯৩৬ সালের ক্যাবল ষ্ট্রিটের ভয়াবহ বর্ণবাদী দাঙ্গার ৮৫তম বার্ষিকীর বর্ণবাদ বিরোধী সমাবেশে অংশ নেয় ।বাঙ্গালী অধ্যুসিত টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকাটি ব্রিটেনের মাইগ্রেন্ট কমিউনিটি এলাকা হিসেবে পরিচিত। ১৯৩৬ সালের ৪টা অক্টোবর মাইগ্রেন্ট ইহুদী কমিউটির বিরুদ্ধে তখনকার সময়ের বর্ণবাদী নেতা ওজওয়াল মজলির নেতৃত্বে হামলা চালালে ব্রিটেনের শান্তিপ্রিয় ইংলিশ ও আইরিশরা মাইগ্রেন্ট কমিউনিটির পাশে দাড়ায়। ভয়াবহ এই রক্তক্ষয়ী দাঙ্গায় শতাধিক পুলিশ সহ হাজার হাজার মানুষ আহত হয়।

 

এর পর বর্ণবাদীদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় বাঙ্গালী কমিউনিটি। ১৯৭৮ সালে ন্যাশনাল ফ্রন্ট নামের বর্ণবাদী গ্রুপ বাঙ্গালী অধ্যুসিত ব্রিকলেন এলাকায় হামলা চালিয়ে আলতাব আলী নামের একজন বাঙ্গালী গার্মেন্টস শ্রমিককে হত্যা করে, শুধু আলতাব আলীই নয় আরো কয়েকজন বাঙ্গালীকে প্রাণ দিতে হয়েছে বর্নবাদীদের হাতে। আলতাব আলী হত্যার পর দশ হাজার মানুষ আলতাব আলীর কফিন নিয়ে মিছিল সহকারে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে গিয়ে সমাবেশ করে। এর পর থেকে বর্ণবাদীরা টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকা ছেড়ে চলে গেলেও ইংলিশ ডিফেন্ট লীগ নামে তারা মাঝে মধ্যে মাইগ্রেন্ট কমিউনিটির উপর চড়াও হয়। গতকাল ৩রা অক্টোবর রোববার লন্ডন সময় দুপুর ১ঘটিকায় ক্যাবল ষ্ট্রীটের বর্ণবাদী দাঙ্গার ৮৫তম বার্ষিকীতে ‘‘কয়েকটি বর্ণবাদ বিরোধী সংগঠন ‘‘সেলেবেরিট দি স্পিরিট অব ক্যাবল ষ্ট্রীট‘‘ নামে বর্ণবাদ বিরোধী সমাবেশের আয়োজন করে। দুপুর ১ঘটিকায় প্রতিবাদকারী সংগঠন গুলোর সদস্যরা ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে সমবেত হন ক্যাবল ষ্ট্রীটে এর পর সেখান থেকে র‌্যালি নিয়ে চলে যান সমাবেশস্থল ক্যাবল ষ্ট্রীট পার্কে এই স্থানেই বর্ণদাবী দাঙ্গা সংগঠিত হয়েছিল ১৯৩৬ সালে। বিকেল দু‘টায় ডেবিড রুসেনবার্গ ও জুলি বেগমের যৌথ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক ব্রিটিশ লেবার লিডার জেরেমি করবিন এমপি, শেরম গ্রাহাম (ইউনাইট), বাংলাদেশী বংশদ্বোত লাইম পপলার এন্ড লাইম হাউজ আসনের ব্রিটিশ এমপি আফসানা বেগম, রাব্বি হ্যারসেল গ্লুক, মাইক লায়ন (আরএমটি), টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, জগিন্দার বানিস ( আই-ডবলিও-এ-জিবি),মারলিন সিডাওয়ে (আই-বি-এম-টি), ম্যাসিমো আন গারা এমপি (ইতালী),ওয়েম্যান ব্যানেট (এস-টি-ইউ-আর), রবার্ট গিফিন (সিপিবি) প্রফেসর ম্যারী ডেভিস, আমিনা প্যাটেল (টি-এইচ-ইউনিসন) আবুল চৌধুরী (টি-এইট-এন-ই-ইউ) ডেভিড ব্যান্স বার্গ , জুলি বেগম ও নূরুদ্দিন আহমদ।)

বক্তারা বলেন ম্যালটিক্যালচারাল ব্রিটিশ সোসাইটিতে র‌্যাসিজম ও ফ্যাসিজমেন স্থান নেই। বর্ণবাদীরা যুগে যুগে তাদের লেবাস পরিবর্তন করে শান্তিপ্রিয় সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে, ওয়াজওয়ার মজলির সাদা সার্ট, পরবর্তিতে ন্যাশনাল ফ্রন্ট বর্তমানে ইংলিশ ডিফেন্স লীগ এরা সমাজের শত্রু। এই দেশ সকল ধর্মের সকল বেের্ণর। এখানে বর্ণবাদ ও উগ্রবাদের স্থান নেই। আমরা উগ্রবাদ ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। বক্তরা বলেন ইদানিং র‌্যাসিট ও ফ্যাসিজমের পাশাপাশি টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায় নতুন করে উগ্রবাদের বিস্তৃতি ঘটেছে, বক্তারা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানান। আয়োজক সংগঠন গুলোর মধ্যে রয়েছে জুইশ সোস্যালিষ্ট গ্রুপ, আলতাব আলী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশী ওয়ার্কাস কাউন্সিল, গ্রাসরুট ব্লাক ল্যাফট, লিবারেশন মুভমেন্ট, ইউনাইট দি ইউনিয়ন, ষ্টেন্ড আ্যাপ টু রেসিজম, পিস এন্ড জাষ্টিজ, প্রজেক্ট ট্রেড ইউনিয়ন এন্ড কমিউনিষ্ট পার্টি অব লাইফ ব্রিটেন, ইন্ডিয়ান ওয়ার্কার এ্যাসিাসিয়েশন (জিবি), মনিং ষ্টার, ইন্টারন্যাশনাল ব্রিগেড মেমোরিয়্যাল ট্রাষ্ট, টাওয়ার হ্যামলেটস ইউনিয়ন, শেডুয়েল ট্রাষ্ট ইউনাইট এন্ড র‌্যারিজম, রেল মারিটাইম এন্ড ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন।

You might also like