লন্ডন হাই কমিশনের স্মারক অনুষ্ঠানে বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলনে বঙ্গমাতার অবদান পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করার প্রস্তাব

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

লন্ডনঃ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেসা মুজিব-এর ৯২তম জন্মবার্ষিকীতে বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন আয়োজিত “The spirit of Glorious Bangamata, the inspiration of Indomitable Bangladesh” শীর্ষক স্মারক অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে মহিলা ও শিশু-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি ভবিষ্যত প্রজন্মকে বঙ্গমাতার আদর্শে অনুপ্রাণীত করার জন্য তাঁর জীবন, কর্ম ও অবদান পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করার প্রস্তাব করেন।

ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, “বাঙ্গালির স্বাধীকার আদায়ের প্রতিটি রাজনৈতিক আন্দোলনে বঙ্গমাতা শুধু সক্রিয়ভাবে যুক্তই ছিলেন না, তিনি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অন্যতম পথ-প্রদর্শকও ছিলেন। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে তিনি অসহায় নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও কুঠির শিল্পসহ বিশেষ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে নারীসমাজের আর্থ-সামাজিক অবস্থান সুদৃঢ় করার যে ভিত্তি রচনা করে গেছেন তার ফলশ্রুতিতেই আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নের রোল-মডেলে পরিণত হয়েছে।

স্বাগত বক্তব্যে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বঙ্গমাতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, “বঙ্গবন্ধু সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালির প্রেরণা ছিলেন, আর বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর পথ চলার সকল অনুপ্রেরণার মূল উৎস। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মহান নেতাদের নেপথ্যে যে সকল বীর নারী ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে বঙ্গমাতা অন্যতম। তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও দূরদর্শী উপদেষ্টা হিসেবে বাঙ্গালির স্বাধীকার সংগ্রামের ইতিহাসে চির-ভাস্বর এবং বিশেষ করে আজকের প্রজন্মের বাংলাদেশি নারীদের কাছে রত্নগর্ভা মা, নি:স্বার্থ ও অসীম সাহসী দেশপ্রেমিক এবং নিরহঙ্কার ও নির্লোভ মানুষ হিসেবে অনুসরণীয় রোল-মডেল হয়ে থাকবেন।স্মারক অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের সঞ্চালনায় ‘Bangamata Begum Fazilatun Nesa Mujib: A Fearless Companion in Crisis and Struggle’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন যুক্তরাজ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ, বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক শামীম আজাদ, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট নারী নেতৃ খালেদা কোরেশী, যুক্তরাজ্যের Central Family Court -এর প্রথম ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সিনিয়র বিচারক খাতুন স্বপ্নারা, প্রথম ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কিউসি ব্যারিস্টার সুলতানা তফাদার এবং কাউন্সিলর শান্তু ফেরদাউস।

সুলাতান মাহমুদ শরীফ যুক্তরাজ্যে প্রবাসী তরুণ-তরুণীদের বঙ্গমাতার সহজ-সরল জীবন ও আদর্শ থেকে নৈতিক শিক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানান।প্যানেল আলোচনায় বক্তারা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রখ্যাত নারীদের সাথে বঙ্গমাতাকে তুলনা করে বাঙ্গালি জাতি গঠনের ইতিহাসে সবচেয়ে সাহসী ও অনুপ্রেরণাদায়ী নারী হিসেবে তাঁর জীবন, কর্ম ও অবদান সম্পর্কে আরো গবেষণা ও প্রকাশনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।অনুষ্ঠানে হাই কমিশনার বঙ্গমাতার ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২২ সাল থেকে “বঙ্গমাতা ওমেন এমপাওয়ারমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রবর্তেনর ঘোষনা দেন যা যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদানের জন্য ব্রিটিশ ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি নারীদের প্রদান করা হবে।অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গমাতা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ও তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। এরপর বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে তাঁর প্রতি গভীর শুদ্ধা জানানো হয় এবং তাঁর জীবন ও কর্মের ওপর একটি প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বঙ্গমাতাকে উৎসর্গ করে একটি কবিতা আবৃত্তি করেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী মুনিরা পারভীন।

You might also like