লোডশেডিং ভোগান্তিতে কমলগঞ্জের ৫ শতাধিক সিএনজি অটোরিকশা
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ বিদ্যুৎসংকট মোকাবিলায় লোডশেডিংয়ের কারণে সিএনজি’র অভাবে জ্বালানি সংকটে পড়েছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫ শতাধিক সিএনজি অটোরিকশা। এ কারণে গত তিনদিন ধরে বেকার হয়ে বসে রয়েছেন অধিকাংশ অটোরিকশা চালক। চালক ছাড়াও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন অটোরিকশার মালিকরা। আর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীসাধারণ।কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজার জেলায় লোডশেডিং, জেনারেটর ও সরকারি নির্দেশনা না মানায় ৫টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ রয়েছে। ফলে যে কয়টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন খোলা রয়েছে সেগুলোতে অতিরিক্ত গাড়ি ও ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে গ্যাস পাচ্ছেনা বেশিরভাগ অটোরিকশা। ফলে বাধ্য হয়ে গাড়ি বন্ধ রাখতে হচ্ছে চালকদের। এছাড়া উপজেলার সড়কগুলোতে অটোরিকশার বিরুদ্ধে গ্যাস সংকটের অজুহাতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগও রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল কমলগঞ্জ উপজেলার একমাত্র সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নেয়ার জন্য অটোরিকশার প্রায় ১ কিলোমিটারের দীর্ঘ দ’ুটি লাইন হয়েছে। জেলার ৫টি গ্যাস স্টেশন বন্ধ থাকায় বিভিন্ন উপজেলা থেকে গ্যাস নেয়ার জন্য এসব লাইনে দীর্ঘ কয়েকঘন্টা দাঁড়িয়ে আছেন চালকরা। এছাড়া বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে গ্যাস স্টেশন কয়েকঘন্টা বন্ধ রাখা হয়। ফলে উপজেলার ভানুগাছ, আদমপুর, শমশেরনগর, মুন্সিবাজার ও শহীদনগর বাজারের প্রায় ৫ শতাধিক অটোরিকশা গ্যাস না পাওয়ায় বন্ধ রয়েছে।গ্যাস নিতে আসা অটোরিকশা চালক রমুজ আলী, শরফান মিয়া, মালিক মিয়া জানান, তাদের মধ্যে অনেকে রাত তিনটার সময় লাইনে দাঁড়িয়ে সকাল সাতটার সময় গ্যাস পেয়েছেন। আবার কেউ দীর্ঘ তিন ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর শুনেন, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান তারা।ফিলিং স্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশা চালক সুহেল মিয়া, রমেশ পাল বলেন, একদিন আগে আমার গাড়ি বন্ধ ছিল। গতকাল সকাল সাতটার সময় গ্যাস নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু প্রায় চার ঘন্টা লাইনে দাঁড়ানোর পর হঠাৎ করে গ্যাস স্টেশন বন্ধ হয়ে যায়। গ্যাস না পেলে গাড়ি কিভাবে চালাবো আর পরিবারের জন্য কি নিয়ে যাবো, জানিনা।বিশেষ করে উপজেলার অটোরিকশাগুলো মৌলভীবাজার জেলা শহরের কয়েকটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করে। কিন্তু বিদ্যুৎ লোডশেডিং, জেনারেটর সমস্যা ও সরকারি নির্দেশনা না মানায় ৫টি ফিলিং স্টেশন বন্ধ হওয়ার কারণে অটোরিকশাগুলো কোনোভাবেই কোনো ধরনের জ্বালানি সংগ্রহ করতে পারছে না। এতে অটোরিকশার চালক, মালিক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।শমশেরনগরের উত্তরবাজার অটোরিকশা স্ট্যান্ডের সভাপতি মো. মোস্তফা মিয়া বলেন, গ্যাস সংকটে আমাদের স্ট্যান্ডের প্রায় ২০০ গাড়ি বন্ধ হয়ে গেছে। গত কয়েকদিনের চেয়ে আজ সবচেয়ে বেশি গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের অনাহারে থাকতে হবে। সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোর সমস্যা সমাধান করে তাড়াতাড়ি গ্যাস স্টেশন খুলে দেওয়া দরকার।