‘শিশুদের নোবেল’ পেলেন বাংলাদেশের সাদাত

আন্তজার্তিক ডেস্ক
সত্যবাণী

নেদারল্যান্ডস: শিশু-কিশোরদের নোবেল খ্যাত আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার পেল বাংলাদেশের সাদাত রহমান। সাইবারবুলিং বা অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষায় অ্যাপ তৈরির জন্য তাকে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে।শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) নেদারল্যান্ডের হেগে এক অনুষ্ঠানে মানবতাধিকার কর্মী ও নোবেল জয়ী মালার ইউসুফজাই সাদাতকে জয়ী ঘোষণা করে পুরস্কার তুলে দেন। গত বছর এ পুরস্কার পেয়েছিলেন সুইডেনের কিশোরী পরিবেশকর্মী গ্রেট থুনবার্গ।শিশুদের অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়ে অবদানের জন্য নেদার‌ল্যান্ডস ভিত্তিক সংকগঠন ‘কিডস-রাইটস’ প্রতিবছর এ পুরস্কার দিয়ে থাকে। এ বছর ৪২টি দেশের ১৪২ জন প্রতিযোাগির মধ্যে এক্সপার্ট কমিটি বাংলাদেশের এ কিশোরকে নির্বাচন করে।

সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সাইবারবুলিং প্রতিরোধী অ্যাপ তৈরি এবং এর মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের অনলাইনে হয়রানির বিষয়ে সচেতন করার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি স্বরূপ সাদাতকে সম্মানজনক এ পুরস্কার তুলে দেয়া হলো।নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী মালালা ইউসুফজাই ১৭ বছর বয়সী সাদাতকে সবার জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।এক ভার্চ্যুয়াল বক্তব্যে সাদাতকে নিয়ে মালালা বলেন, ‘সে বিশ্বজুড়ে তরুণ-তরুণীদের সাইবার বুলিং বন্ধ করতে এবং তাদের সম্প্রদায়ে সমবয়সীদের যারা মানসিক সহিংসতায় ভুগছে তাদের সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছে। সাদাত একজন সত্যিকারের পরিবর্তনকারী।জানা যায়, সাদাত রহমানের তৈরি অ্যাপের নাম ‘সাইবার টিনস’। এর মাধ্যমে পরিচয় গোপন রেখে একদল স্বেচ্ছাসেবকের কাছে অনলাইনে হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ জানানো যায়। পরে ওই স্বেচ্ছাসেবকরাই প্রয়োজনবোধে পুলিশ বা সমাজকর্মীদের কাছে যান। এছাড়া কিশোর-কিশোরীদের অনলাইন নিরাপত্তার বিষয়ে শিক্ষা দেয় এই অ্যাপ।

সাইবারবুলিংয়ের শিকার হয়ে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীর মৃত্যুর খবর গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছিল সাদাতকে। এধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সেই উদ্দেশ্যেই ‘সাইবার টিনস’ অ্যাপ তৈরির চিন্তা মাথায় আসে তার। সাদাতের নিজ জেলা নড়াইলে ১ হাজার ৮০০ জনের বেশি কিশোর-কিশোরী বর্তমানে এই অ্যাপ ব্যবহার করছে।অ্যাপটি চালু হওয়ার পর থেকে ৩০০ জনেরও বেশি ভুক্তভোগীকে সেবা দেয়া হয়েছে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে অন্তত আটজন নিপীড়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে।আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারে অর্থমূল্য হিসেবে এক লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় এক কোটি টাকা) পেয়েছে সাদাত হোসেন। এই অর্থ সাইবারবুলিং-রোধী অ্যাপটি বাংলাদেশজুড়ে ছড়িয়ে দেয়ার কাজে খরচ করা হবে বলে জানিয়েছে এ কিশোর।পুরস্কার গ্রহণের সময় সাদাত বলেন, ‘সাইবারবুলিংয়ের বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে একপ্রকার যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধের আমি এক সৈন্য। সবার চেষ্টা থাকলে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা জিততে পারব।’

You might also like