সংস্কার: দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও নির্বাচনী রোডম্যাপ চায় বামপন্থীরা
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে তাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো। তবে এই সংস্কারের প্রস্তাবগুলো তৈরির আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত বলে তারা মনে করছে।পাশাপাশি তারা নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা চায়।সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরতে বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশ জাসদ এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চার নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।এই বামপন্থী দলগুলোর নেতারা জানান, সরকার যে বিষয়গুলোতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সে বিষয়ে প্রস্তাবগুলো তৈরির আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করাটা জরুরি।বিশেষ করে নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের যে প্রস্তাব তৈরি হবে সেখানে রাজনীতি দলের অংশগ্রহণ ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মতামত নেওয়া উচিত। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ এখনো না না দেখায় অনেকেই হতাশা প্রকাশ করছেন। একইসঙ্গে আগে থেকেই তারা নির্বাচনী রোড ম্যাপ ঘোষণা করা উচিত বলে মনে করেন।
বামপন্থী ওই নেতারা আরো জানান, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। এর বাইরে বাকি যে পাঁচটি বিষয়ে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে সেগুলোর প্রস্তাব আগে থেকেই তৈরি করে রাখতে হবে যেটা নির্বাচিত সরকার এসে বাস্তবায়ন করবে। কারণ সংস্কার এবং সেটি বাস্তবায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। আর এই সংস্কার কার্যক্রমগুলো সফল করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় আনতে হবে । যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে এর জন্য এখনই নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়া প্রয়োজন বলে ওই নেতারা জানান।এদিকে সরকারের গঠিত কমিশনের কাছে সংস্কার প্রস্তাবগুলো তুলে ধরতে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বামপন্থী দলগুলো। দলগত এবং জোট গত ভাবে তারা এই সংস্কার প্রস্তাব তৈরির কাজ করছে। এ ব্যাপারে দল ও জোটগুলো পরস্পরের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে। এ দল ও জোট গুলো হল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদসহ ছয়টি রাজনৈতিক দলের বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশ জাসদ এবং চারটি বাম দলের ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বাংলানিউজকে বলেন, সরকার যে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সেখানে ছয়টি বিষয়ের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের বিষয়টি আলাদা একটি বিষয়। এই বিষয়টি নিয়ে প্রস্তাব তৈরির আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। সেই সঙ্গে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। কিন্তু আমরা সে উদ্যোগ দেখছি না। সংস্কারের সঙ্গে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। অন্য যে পাঁচটি বিষয় রয়েছে সেগুলোরও সরকার প্রস্তাব তৈরি করে রাখবে যেটা নির্বাচিত সরকার এসে বাস্তবায়ন করবে। কারণ এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের প্রস্তাবগুলো তুলে ধরতে চাই। সে ক্ষেত্রে আমরা আগে থেকেই আমাদের প্রস্তাব দল এবং জোটগত ভাবেও তৈরি রাখবো। এটা নিয়ে আমরা বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চা এবং বাংলাদেশ জাসদ এদের সঙ্গেও আলোচনা করব। আলোচনার ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বাংলানিউজ কে বলেন, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে সংস্কারের জন্য একটা প্রস্তাব কমিশনের কাছে দেবো। এর আগে আমরা সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিশেষ করে কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদ, বাম গনতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চা এদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তাব তৈরি করব যাতে প্রস্তাবগুলোতে একই রকম মত প্রতিফলিত হয়। দলের সংস্কার প্রস্তাব তৈরীর কাজ আমরা করছি। প্রয়োজনে আমরা দেখা করে সরকারের প্রস্তাব দেবো। আমরা মনে করি সংস্কার কাজটা জরুরি, এই কাজটা আগে করা উচিত। আর যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচন দেওয়া। সংস্কারের কাজ চালানোর পাশাপাশি নির্বাচনের রোড ম্যাপটা ঘোষণা করা উচিত বলে মনে করি। সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম