সাকিবকে বিপিএলের সিইও হওয়ার আমন্ত্রণ বিসিবির

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ বিপিএল নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ৯ম আসরটি মাঠে গড়ানোর আগে নানা অব্যস্থাপনা নিয়ে সমালোচনা করেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দায়িত্ব পেলে মাত্র দুমাসে সব সমস্যার সমাধান করতে পারবেন বলে জানান এ অলরাউন্ডার।বিপিএলের অবস্থা ‘যা-তা’ বলে মনে করেন সাকিব। বিসিবির সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। অনেক বিষয়ে সাকিবের সঙ্গে একমত পোষণ করেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। অনেকেই সাকিবের কথাগুলো যৌক্তিক মনে করেছেন। তার এমন বক্তব্যের পর এবার মুখ খুলেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান শেখ সোহেল। সব সমালোচনার জবাব দিয়ে সাকিবকে আগামী আসরে প্রধান নির্বাহী (সিইও) হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সোহেল জানান, সাকিব চাইলে পরের আসরেই তাকে সিইওর দায়িত্ব দেয়া হবে।বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রথমেই সাকিবকে স্বাগত জানাই, ওকে ধন্যবাদ। ওর দৃষ্টি থেকে ও বলেছে এবং আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা গর্ভনিং কাউন্সিলের পক্ষ থেকে তাকে আসার জন্য স্বাগত জানাই। ও যদি চায়, সামনের বছর থেকেই সিইওর দায়িত্ব পালন করুক।’এর আগে সিইওর দায়িত্বে থাকলে দুই মাসেই সব ঠিক করতে পারবেন বলে দাবি করেন সাকিব। এ প্রসঙ্গে শেখ সোহেল বলেন, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী মনে করেন এখন শেখ হাসিনা আছেন। উনি ১৫ বছর কাজ করে জনগণকে খুশি করতে পারেননি। সিনেমা দেখে কিন্তু সবকিছু পূরণ হয় না, বাস্তবতার সঙ্গে মিল হয়না। এখন তো ও খেলতেছে। খেলা ছেড়ে আসতে পারবে না। সামনের বছর চলে আসুক।’

তিনি বলেন, ‘এতে আসলে কোনো অস্বাচ্ছন্দ্য নেই। একটু আগেও সাকিব আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলো। মাশরাফির সঙ্গে কথা বলছিলাম। দেখেন, আমরা সবাই একই পরিবারের লোক। মত ভিন্ন থাকতেই পারে।সাকিব ও মাশরাফির মতো তারকারা টুর্নামেন্টকে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন কি-না, জানতে চাইলে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেন, ‘কেউ যদি বলে বলতেই পারে। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন যে হ্যাঁ; আমি তো দেখি সাকিব প্রিমিয়ার ডিভিশনের অনেক খেলা খেলে না। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিপিএল তো মিস দেয় না। আমি যদি পাল্টা প্রশ্ন করি, ও তো প্রিমিয়ার ডিভিশনের অনেক ম্যাচ খেলে না। বলতেছে যে প্রিমিয়ার ডিভিশন থেকে এটা আমাদের খারাপ। কিন্তু আমি তো দেখি যে বিপিএলের কোনো এডিশনের কোনো খেলা ও বাদ দেয় না। কিন্তু প্রিমিয়ার ডিভিশন খেলে না। তো এটা আসলে কোনো আর্গুমেন্ট না।’

এর আগে সাকিব বলেছিলেন, ‘‘আমাকে যদি (বিপিএলের) প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব দেয়া হয়, বেশিদিন লাগবে না। আমার ধারণা এক থেকে দুই মাস লাগবে সর্বোচ্চ; সবকিছু ঠিক করতে। দুই মাসও লাগার কথা না, দুই মাস অনেক দূরের কথা বলছি। ‘নায়ক’ সিনেমা দেখেছেন না? একদিনেও অনেক কিছু করা সম্ভব। যে করতে পারে সে সবকিছুই করতে পারে।সাকিব বলেন, ‘এই পুরো সবকিছু বাদ দিয়ে আবার ড্রাফট হবে, অকশন হবে, ফ্রি টাইমে বিপিএল হবে, সব আধুনিক টেকনোলজি থাকবে। ব্রডকাস্ট ভালো থাকবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভেন্যু থাকবে।বিপিএল নিয়ে বিসিবি সবসময়ই স্পন্সরের সংকটের কথা বলে। সাকিব অবশ্য বিশ্বাস করেন না যে, টাকার অভাব। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্রিকেটের বাজার বেশ বড়; বিসিবি কর্তাদেরই বরং স্বদিচ্ছার অভাব।সাকিব বলেন, ‘পারিনি নাকি চাইনি, জানি না- বলাটা কষ্টকর। চাইলে না পারার কোনো কারণ আমি দেখি না। আমার মনে হয়, আমরা সৎ মনে কখনও চাইনি কিছু করতে এখন পর্যন্ত। বাজেট নেই, কারণ আমরা বাজেট তৈরি করতে পারিনি। যদি তৈরি করতে পারতাম, মান অর্জন করতে পারতাম- অবশ্যই এই বাজেটটা অনেক বড় হওয়ার কথা ছিল।গ্রামের এমন কোনো প্রত্যস্ত অঞ্চল দেখবেন না যেখানে ক্রিকেট খেলা হচ্ছে না। এমন তো না যে এটার জনপ্রিয়তা নেই। ১৬-২০ কোটি মানুষের একটা দেশে এতো পছন্দের একটা খেলা এটার বাজারটা থাকবে না; এটা খুবই দুঃখজনক। মানে আমি অন্তত বিশ্বাস করি না। ’স্পন্সর সংকট নিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমার ধারণা এটা মার্কেটিংয়ের জায়গা থেকে বড় একটি ব্যর্থতা। যে কারণে আমরা সেই রকম একটা বাজার তৈরি করতে পারিনি। (ডিআরএস নেই) বাজে সঙ্কট সম্ভবত। স্বদিচ্ছা থাকলে কোনো কিছু থেমে থাকার কারণ দেখি না। আমি তো কোনো কারণই দেখি না ডিআরএস না থাকার, তিন মাস আগে ড্রাফট বা অকশন না হওয়ার এবং দলগুলো এক মাস আগে ঠিক হবে না।’সাকিব বলেন, ‘খেলোয়াড়রা এভেইলেবল থাকবে। এখন এক প্লেয়ার একদিন আসবে, দুইদিন পর চলে যাবে। কে কখন আসবে কখন যাবে কেউ জানে না। ড্রেস পায়নি প্লেয়াররা। আমি আপনাদের নিউজেই দেখেছি। একটা যা-তা অবস্থা। এর থেকে আমাদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) আরও ভালোভাবে হয়। কারণ তারা আগে থেকেই টিমটা গোছাতে পারে। আরও আগে থেকে জানে যে টিমটা কি হচ্ছে এবং তারা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে।’

You might also like