সিলেটের ৫ উপজেলায় বন্যা: কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাটের সাথে সিলেটের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট অফিস থেকেঃ টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে পড়েছে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল। গতরাত থেকে তেমন বৃষ্টি না হলেও উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে বাড়ছে নদ-নদীর পানিও। সুরমা নদীর পানি একাধিক পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাটের সাথে সিলেটের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মজিবর রহমান বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি সিলেটের ৫ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৭৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানান।পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র সিলেট কার্যালয় সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৮সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জকিগঞ্জের আমলসিদে কুশিয়ারা নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া, সারী, গোয়াইন, পিয়াইন ও ধলাই নদীর পানিও বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেটে ১৮মে পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে রাতের বেলা বৃষ্টি বেশি হবে।পাউবো কর্মকর্তারা জানান, সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টির সঙ্গে যোগ হয়েছে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল। ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা ও আসাম প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এরফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢল ও বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট এলাকার নিম্নাঞ্চল। এই তিন উপজেলায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট এবং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এসব গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। এ উপজেলায় ফসলি জমিও তলিয়ে গেছে। একই অবস্থা গোয়াইনঘাটের।এদিকে, সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মজিবর রহমান জরুরি ভিত্তিতে মহানগরীর ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে সুরমা নদীর ভাঙ্গন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পাউবোকে নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার দুপুরে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভাঙনের মুখে পড়া টুকেরবাজার এলাকার পীরপুর পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসক বলেন, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এলাকাবাসী বিপদগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন। যেকোন সময় ভাঙন দেখা দিতে পারে। যেভাবেই হোক মানুষকে নিরাপদ রাখতে হবে।

জেলা প্রশাসক জানান, সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে ইতোমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, বন্যা কবলিত ৫ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৭৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা জানান, টানা ভারি বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লোভা-সুরমা নদীর পানি বাড়তে থাকে। সুরমা নদীর প্রবল ঢলে উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের কুওরঘড়ি সুরমা ডাইকে ভয়াবহ ভাঙ্গণসহ সুরমা ডাইকের বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে বানের পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম, বড়চতুল, লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব, সাতবাঁক, কানাইঘাট সদর, দিঘীরপাড় পূর্ব ও দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা, রাস্তা-ঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।
কানাইঘাট বাজার হাঁটুপানি থেকে কোমর পানি বিরাজ করায় বাজারের অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে মালামালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কানাইঘাট-চতুল-দরবস্ত সড়ক, কানাইঘাট-গাছবাড়ী-গাজী বোরহান উদ্দিন সড়ক, কানাইঘাট-সুরইঘাট সড়ক ও কানাইঘাট-শাহবাগ-জকিগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সিলেট শহরের সাথে সব ধরনের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিহ্ন রয়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৪২ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিংসহ নদীভাঙ্গন এলাকা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বন্যা কবলিত এলাকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিদর্শন করছেন।
গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা জানান, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সিলেটের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা সদর থেকে সিলেট শহরের সাথে একমাত্র সারী-গোয়াইনঘাট সড়কের লাফনাউট, আলীরগাঁও কলেজ, আলীরগ্রাম, বেকরা ব্রিকফিল্ডসহ সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি রয়েছে। এতে যানবাহন যাতায়াতে বিঘœ ঘটছে।এদিকে, গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়ক, গোয়াইনঘাট-সোনারহাট সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি উঠে পড়ায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তাছাড়া গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়কের বেশ কয়েক স্থানে পানি উঠেছে। গ্রামীণ জনপদের সবগুলো রাস্তাঘাট এখনও বারের পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। অনেক এলাকায় অনেক ঘরবাড়ি পানির নীচে রয়েছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তাহমিলুর রহমান জানান, বন্যার পানিতে উপজেলার সিংহভাগ এলাকায় তলিয়ে গেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি ২৪ টন চাল বরাদ্ধ দিয়েছেন। পানি না কমলে সরকারিভাবে আরও সহায়তা বাড়ানোর কথা তিনি জানান।গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ বলেন, বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পানিবন্দী মানুষের খোঁজ-খবর সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
জকিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, কয়েকদিনের অব্যাহত ভারি বৃষ্টিপাত এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে সিলেটের জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে গেছে উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বারহাল, মানিকপুর, কাজলসার ইউপিসহ বিভিন্ন এলাকায় সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙ্গে ও উপচিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বন্ধ হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ যোগাযোগ রাস্তাঘাট। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বীজতলা। তলিয়ে গেছে মাছ চাষের শতাধিক পুকুর ও ফিসারি। পানি নিস্কাশনে প্রতিবন্ধকতা থাকায় তলিয়ে গেছে জকিগঞ্জের প্রধান ডাকঘর, প্রাণীসম্পদ অফিস, স্থল শুল্ক স্টেশন, জকিগঞ্জ ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসা, জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের হোসনাবাদ গ্রামের একাংশসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট। এতে বিভিন্ন এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

বারহাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী জানান, ইউনিয়নের নোয়াগ্রাম, উত্তর কিলোগ্রাম, চকবারাকুলি, শরীফাবাদ, শাহগলী বাজার ও কচুয়া এলাকায় সুরমা ডাইক ভেঙ্গে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত করেছে, তলিয়ে গেছে প্রায় ১ হাজার হেক্টর বোরোধান। বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।বীরশ্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস ছাত্তার জানান, সুপ্রাকান্দি ও বড়চালিয়া গ্রামের বেঁড়ীবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় বাঁধ ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও মানিকপুর ইউনিয়নের বাল্লার বেড়িবাঁধ টি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও রঘুরচক-আকাশমল্লিক এলাকা দিয়েও সুরমানদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু জাফর মো. রায়হান বিষয়টি জানিয়েছেন।
কাজলসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুলকারনাইন লস্কর জানান বড়বন্দ গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো তলিয়ে যায়। তবে আটগ্রাম এলাকার বাঁধ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। হাওরের পানিও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে জকিগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ঝুঁকিপূর্ণ ও ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন। তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা উর্ধ্বতন কর্মকতাদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ টন চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

জকিগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভূমি) পল্লব হোম দাস জানান, ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন সরেজমিনে রয়েছেন। ভাঙ্গন প্রতিরোধে জরুরী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
কোম্পানীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, কালভার্ট ভরাট করে রাস্তা নির্মাণের কারণে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে গ্রামের শতাধিক পরিবার। রাস্তার দুই পাশের বহু একর ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এ চিত্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের কলাবাড়ি-দয়ারবাজার এলাকার। এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও মিলছে না প্রতিকার। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, ভোলাগঞ্জ-কলাবাড়ি-দয়ারবাজার সড়কের আশেপাশের ডোবানালা সব পানিতে বর্ষাকালের মতো টুইটম্বুর। অনেক জায়গায় চলাচলের পথও তলিয়ে গেছে। কৃষি জমিগুলো পানির নিচে রয়েছে।অন্যদিকে, কালভার্ট ভরাট করে দেয়ায় একমুখী পানির চাপে কলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তায় একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিকে কেন্দ্র করে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে খুঁটি পড়ে গিয়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ ভোলাগঞ্জ-কলাবাড়ি-দয়ারবাজার সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে। ৩ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটিতে ছোট-বড় ৭টি কালভার্ট রয়েছে। সড়কের নির্মাণকাজ করতে গিয়ে কালভার্টগুলো ভরাট করে ফেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টিপাতের কারণে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।স্থানীয়রা জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় কিছু ব্যক্তির যোগসাজশে কালভার্টগুলো ভরাট করে নিজেরা সুবিধাভোগ করছেন। এলাকাবাসী জানান, কালভার্টগুলো ভরাট করায় জলাবদ্ধতার কারণে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। কলাবাড়ি গ্রামের শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

সাবেক ইউপি সদস্য আরাফাত আলী বলেন, কালভার্ট ভরাট করে ইতোমধ্যে রাস্তার দুই পাশে ইটের গাঁথুনির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মমিনুল হক এবং মেসার্স এম রহমান (জেভি) এর পক্ষে নিয়োজিত স্থানীয় ঠিকাদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অখিল বিশ্বাস বলেন, কালভার্টগুলোর মুখ আগেই বন্ধ ছিল। রাস্তার কাজে কালভার্টে আমরা হাত দেইনি। পূর্বে যে অবস্থায় ছিল, সেভাবে রেখেই রাস্তার কাজ করা হচ্ছে।কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মোঃ শাহ্ আলম বলেন, কালভার্টগুলো আগে থেকেই বন্ধ ছিল। রাস্তা নির্মাণের কারণে নতুন করে এগুলো বন্ধ করা হয়নি। মূলত খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। এজন্য খালগুলো খনন করা দরকার।উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসিকান্ত হাজং বলেন, কালভার্টের মুখ কোনোভাবেই বন্ধ করা ঠিক হয়নি। খুব শিগগিরই বিষয়টি তদন্ত করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।

You might also like