সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট পালিত
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ বিভিন্ন দাবিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকে সিলেটে ২৪ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট পালিত হয়েছে। ১৯ নভেম্বর শনিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত একটারা এ ধর্মঘট চলে। পরিবহন সংশ্লিষ্ট ৫টি সংগঠন মিলে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। সিলেট বিভাগের ৪টি জেলার প্রত্যেকটিতে আলাদা আলাদাভাবে এই ধর্মঘট পালিত হয়েছে।শনিবার সকাল থেকেই শুধু সিলেট জেলায় ধর্মঘট পালিত হয়। তবে, শুক্রবার সিলেটে ধর্মঘট না থাকলেও অপর ৩ জেলা মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম। প্রাইভেট যানবাহন ছাড়া গণপরিবহন তেমন দেখা যায়নি। শুধুমাত্র কিছুসংখ্যক সিএনজি অটোরিক্সা ছাড়া বড় গাড়ি রাস্তায় চলেনি। ফলে রাস্তাঘাটও ছিল অনেকটা ফাঁকা।এর কারণ উল্লেখ করে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-মাইক্রোবাস ও কোচ পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি হাজী ময়নুল ইসলাম জানান, সিলেটে গতকাল শুক্রবার কোনো ধর্মঘট ছিল না। কিন্তু মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে সকাল থেকে স্থানীয়ভাবে ডাকা ধর্মঘট পালিত হয়েছে। আর ধর্মঘট আহ্বান করে মালিক-শ্রমিক নেতারা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছিলেন। এ কারণে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন সিলেট শহরে ঢুকেনি। তবে, জেলার ভেতরে সিলেট শহর অভিমুখী ছাড়া আন্তঃ উপজেলার গাড়ি চলাচল অব্যাহত ছিল।
তিনি জানান, পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে শনিবার সকাল থেকে সিলেট জেলায় ধর্মঘট শুরু হয়। আর ধর্মঘট সফলে পরিবহন শ্রমিক নেতারা রাস্তায় ছিলেন। কর্মসূচি সফল করতে যা যা প্রয়োজন সবই করা হয়েছে।সিলেটে মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল বন্ধসহ ৩ দফা দাবিতে ধর্মঘট সবার আগে ঘোষণা করে জেলা পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। গত বুধবার সন্ধ্যায়ই তারা ধর্মঘটের ঘোষণা দেন। এরপর ধর্মঘট আহ্বান করে শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ফলে ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছে পরিবহন সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের নেতাকর্মীরা।মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে মালিক শ্রমিকদের ডাকে শুক্রবার সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু হয়। এ কারণে ওই ৩ জেলায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। তবে, ট্রেন ও নৌপথে মানুষজন শহরে এসেছেন।
এদিকে, গতকাল শনিবার ও আগেরদিন শুক্রবার সিলেট ছাড়া বিভাগের অপর ৩ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট থাকার কারণে দুর্ভোগে পড়েন মানুষ। যাত্রীরা জানিয়েছেন, হবিগঞ্জ হলো সিলেট বিভাগের প্রবেশপথ। হবিগঞ্জে ধর্মঘটের ডাক দেয়ায় দূরপাল্লার কোনো গাড়িই সিলেট বিভাগে প্রবেশ করতে পারেনি। বিশেষ করে হবিগঞ্জের প্রবেশমুখ মাধবপুরে অবস্থান নিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা। সিলেটের প্রবেশমুখ শেরপুরেও ব্যারিকেড দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। ফলে সিলেট থেকে কোনো যানবাহনই বাইরে যেতে পারছে না।
সরেজমিনে সিলেটের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট না থাকায় শুক্রবার ঢাকাসহ দূরপাল্লায় যেতে যাত্রীরা ভিড় করছিলেন। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে গাড়ি যেতে পারছে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়। এতে করে যাত্রীরা দিনভর ভোগান্তিতে পড়েন।এদিকে, সিলেট নগরেও আগের তুলনায় কম যানবাহন চলাচল করেছে। গণপরিবহন বলতে কেবল কয়েকটি সিএনজি অটোরিকশাই চলাচল করেছে। প্রাইভেট গাড়ি ছাড়া আর কোনো যানবাহন রাস্তায় দেখা যায়নি।সিলেট জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল কবির পলাশ জানান, আমাদের ধর্মঘট পূর্ব নির্ধারিত। হঠাৎ করে ডাকা হয়নি। পূর্ব নির্ধারিত ধর্মঘট থাকার কারণে শনিবার সকাল থেকে মালিক সমিতির ডাকে সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট পালিত হয়েছে। তিনি জানান, আজকের কর্মসূচির পরও যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি না মানে তা হলে আমরা বৃহৎ পরিসরে কর্মসূচির ডাক দিতে পারি।