সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, সব উপজেলা প্লাবিত

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

সিলেট: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। সবগুলো উপজেলাই ঢলের পানি আর ভারি বৃষ্টিপাতে প্লাবিত হয়েছে। অবর্ণনীয় দুর্ভোগে আছেন বানভাসি মানুষেরা। ঘরে-বাইরে সবখানেই থৈ থৈ করছে বন্যার পানি। ঘরের নিরাপত্তার জন্য আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেননি অনেকে। পাননি কোনো ধরনের ত্রাণও। বিশেষ করে শুরুর দিকে বন্যা আক্রান্তরা আছেন নিদারুণ কষ্টে।সিলেট জেলার অন্তত ৬০টি ইউনিয়ন পুরোপুরি বন্যাক্রান্ত। এসব এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। সরকারি ত্রাণ তৎপরতা চললেও বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকটে পড়েছে মানুষ। বন্যা ও বৃষ্টিপাতে এ পর্যন্ত অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে ৫ উপজেলার বিদ্যুৎ সংযোগ। পানিবন্দি হয়ে বন্ধ একটি বিদ্যুৎ সাব স্টেশন। সাড়ে ৭০০শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে করা হয়েছে বন্যাক্রান্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র।আউশ ধানের ১৩০১ হেক্টর, বোরো ফসলের ১৭০৪ হেক্টর এবং গ্রীষ্মকালীন সবজির ১০০৪ হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার পুকুর ও জলাশয় প্লাবিত হওয়ায় প্রচুর পরিমাণ চাষের মাছ ভেসে গেছে। সিলেট নগরীও নিমজ্জিত ঢলের পানি। সুরমা নদীতে পানি নামতে না পারায় ড্রেনের নোংরা পানি প্রবেশ করেছে বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। নগরেও খুলতে হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। ভেঙে পড়েছে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা।

সিলেটের যেসব উপজেলায় দুর্ভোগের শুরু তার অন্যতম কানাইঘাট। উপজেলার ১ নম্বর ইউনিয়নের মেছা গ্রামে ছয়দিন ধরেই ডুবে আছে যাতায়াতের সহজ পথগুলো। তবে সাময়িক স্বস্তি অন্তত ঘর থেকে নেমে গেছে পানি। তবে পাহাড়ি ঢলের তীব্রতায় ভেসে গেছে বসতভিটার অনেকাংশই। ঘরের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে না পারা বাসিন্দাদের অভিযোগ, ত্রাণ আসেনি এখানে।জেলায় পানিবন্দী অন্তত ১০ লাখ মানুষ। বাড়ছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তির মাত্রা যেন আরও বেড়েছে। আর এখন পর্যন্ত সাড়ে ৭০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ রাখা হয়েছে পাঠদান।

জেলা প্রশাসক মো মজিবর রহমান জানিয়েছেন, গত ১১ মে থেকে অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের ফলে সিলেট জেলা বন্যা আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। জেলার সব নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সিলেট নগরী ও কানাইঘাট উপজেলায় সুরমা নদী, জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় কুশিয়ারা নদী এবং গোয়াইনঘাট উপজেলায় সারি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার উপশহর, চালিবন্দর, মাছিমপুর, যতরপুর, কুশিঘাট, সোবহানিঘাট, নাইওরপুল, তালতলা, তোপখানা, খুলিয়াপাড়া, কাজীরবাজার, কলাপাড়া এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক ও বসতবাড়ি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ ভবনের নিচ তলায় এবং কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।

You might also like