সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি সুনামগঞ্জের ভাটিতে বাড়ছে পানি
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ বৃষ্টিপাত কমায় সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হয়েছে। সিলেটের প্রধান নদী সুরমা গত রোববার সন্ধ্যা ৬টায় সিলেট পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও গতকাল সোমবার বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে এবং কুশিয়ারা নদীর পানি আমলসীদ ও শেওলা পয়েন্টে কমছে। কিন্তু ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি এখনো বাড়ছে। এদিকে, পানি নামার সাথে সাথে সিলেটে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে।
সুনামগঞ্জের উজানে পানি কমলেও ভাটির জনপদে বন্যার পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত রোববার সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নীচে প্রবাহিত হচ্ছিলো। জেলার সবচেয়ে বেশি বন্যাকবলিত ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় পানি কমছে, তবে তা খুব ধীরগতিতে।
সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম দৈনিক দেশবার্তাকে জানিয়েছেন, গত রোববার পর্যন্ত সিলেট জেলায় বন্যার্তদের জন্য ৪৪১ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া, গতকাল সোমবার বিভিন্ন এলাকায় ৮ হাজার ৮শ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, গত রোববার পর্যন্ত সিলেট জেলার ৯৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৭ হাজার ১৫৭ জন মানুষ অবস্থান করছেন। জেলায় এ পর্যন্ত নগদ ১৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
দক্ষিণ সুরমা থেকে সংবাদদাতা জানান, দক্ষিণ সুরমায় সুরমা নদীর বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও এখনো অনেক লোকজন পানিবন্দী রয়েছেন। কুশিয়ারা নদীর পানি কুলকুচি ও খেসখালী খাল দিয়ে প্রবেশ করায় দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার, দাউদপুর, কুচাই, জালালপুর, সিলাম ও লালাবাজার ইউনিয়নে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি, মোল্লারগাঁও ও কামালবাজার ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও বাড়ি-ঘরের আঙিনায় এখনো পানি রয়েছে। ফলে মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের হামিদা খাতুন শিশু বিদ্যালয় ও কামালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে এখনো ৫০টি পরিবার অবস্থান করছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরে পানিবাহিত রোগ দেখা দেয়ার আশাঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমার ইউএনও নুসরাত লায়লা নীরা জানান, এ পর্যন্ত দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ও কামালবাজার ইউনিয়নের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের মধ্যে ৩০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
জকিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, আমলসীদ ত্রি-মোহনার ডাইকের ভাঙ্গন কবলিত অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ অনেকটা কমে এসেছে। তবে, উপজেলার নিম্নাঞ্চল এখনও বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। নদীভাঙন ও বন্যার কারণে প্লাবিত হয়ে অনেক রাস্তাঘাট চলচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় লোকজন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। পানি কমলেও বানভাসি লোকজন এখন বিশুদ্ধ পানি আর খাবারের তীব্র সংকটে ভুগছেন। উপজেলা প্রশাসনের ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্রের কয়েকটি থেকে ইতোমধ্যে লোকজন বাড়িতে ফেরা শুরু করেছেন। অপর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহের কারণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তা বিতরণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
এদিকে জকিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এ পর্যন্ত মোট ৩৬ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে গত রোববার বরাদ্দকৃত চালের পরিমাণ ২০ মেট্রিক টন।
কোম্পানীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, কোম্পানীগঞ্জে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে বেড়েছে দুর্ভোগ। লোকজন ঘরের ভেতরে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করছেন। ঘরের মালামাল গোছাতে শুরু করেছেন। বাসাবাড়ি ছেড়ে যারা আত্মীয়স্বজন ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাদের অনেকেই নিজ ঠিকানায় ফিরেছেন। তবে কিছু কিছু এলাকার বাড়ি-ঘরে এখনও পানি রয়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট এখনো পানিতে ডুবে রয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা দুর্ভোগে রয়েছেন।
শিমুলতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ফজলুর রহমান জানান, এখনও ঘরের ভেতর পানি রয়েছে। তবুও বাসায় ফিরে এসেছি। এখন কষ্ট আরও বেড়েছে। ঘরের চারপাশে ময়লা জমেছে। এসব পরিষ্কার করতে হচ্ছে। ঘরের আসবাবপত্র, মালামাল গোছাতে সময় দিতে হচ্ছে। রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
ইউএনও লুসিকান্ত হাজং বলেন, বন্যার্তদের জন্য আমাদের ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত ৩২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। ৮০০ পরিবারকে শুকনো খাবার প্রদান করা হয়েছে। ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকার শিশুখাদ্য ও জিআর ক্যাশ ১ লক্ষ টাকা দিয়ে তেল, ডাল, আলু ও লবণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগ মোকাবেলায় আরও ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এ থেকে ২ লক্ষ টাকা খরচ করে চিড়া ও গুড়ের ১১৫০ প্যাকেট প্রস্তুত করে বানভাসিদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা জানান, কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও পানি কমার সাথে সাথে ব্যাপক জলাবদ্ধতার কারণে জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এখনও সুরমা নদীর ভাঙ্গন কবলিত ডাইক দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সোমবার সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৬০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এখনও উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন। পানি কমার সাথে সাথে সর্বত্র ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করছে। বন্যার পানি ধীর গতিতে কমার কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শত শত কাঁচাবাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কানাইঘাট বাজার থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও পুরো বাজারে গলিপথ নর্দমায় একাকার হয়ে যাওয়ায় বাজারে আসা লোকজন দুর্গন্ধের শিকার হচ্ছেন। বাজার থেকে ময়লা আবর্জনা সরানো হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। বন্যা দুর্গতদের মাঝে সরকারিভাবে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনক, প্রবাসী ও ব্যক্তি উদ্যোগে চালসহ শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ অব্যাহত আছে।
গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, গোলাপগঞ্জে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গোলাপগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমলেও কমছে না কুশিয়ারা নদীর পানি। যে কারণে প্রতিদিন কুশিয়ারা তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে পড়ছেন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ।
এদিকে, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও আরো ৪/৫ টি বিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার উপক্রম বলে উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেওয়ান নাজমুল আলম জানান, ইতোমধ্যে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়া উপজেলার ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলোতে একবারেই শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার উপযোগী নয় বলে জানান তিনি।গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা জানান, গোয়াইনঘাটের বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতি হয়েছে। পানি কমলেও পানিবন্ধী মানুষের দূর্ভোগ আর হাহাকার আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ত্রাণ, গো-খাদ্য এবং বিশুদ্ধ পানির চরম অভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন সরকারি-বেসরকারী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। উপজেলায় ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু থাকলেও পানি কমার কারণে শতাধিকের উপর লোকজন বাড়িতে চলে গেছেন। গত রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২১৯ জন পানিবন্দী মানুষ রয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রে।গোয়াইনঘাটের ইউএনও মোঃ তাহমিলুর রহমান জানান, ফতেহপুর ও ডৌবাড়ী ইউনিয়ন ছাড়া বাকি ইউনিয়নের অবস্থা অনেকটা ভাল। এ পর্যন্ত ৫৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে এবং আরও ২২ টন চাল বিতরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জের উজানে পানি কমলেও ভাটির জনপদে বন্যার পানি বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে জেলার সবচেয়ে বেশি বন্যাকবলিত ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় পানি কমছে ধীরগতিতে।
প্রদিকে, উজানের পানি জেলার ভাটি এলাকা হিসেবে পরিচিত দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় বাড়তে শুরু করেছে। এ দু’ উপজেলার হাওরগুলো এখন পানিতে টইটম্বুর। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ২/১ দিনের মধ্যে এ দু’টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
শাল্লার ইউএনও মোঃ আবু তালেব জানান, শাল্লা উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৩ ফুট পানি বেড়েছে। বন্যার আশঙ্কায় উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য ১০৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও প্রয়োজনীয় মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই অবস্থা দিরাইয় উপজেলারও।সুনামগঞ্জে বন্যাকবলিত ৫ উপজেলার মধ্যে ছাতক ও দোয়ারাবাজার আক্রান্ত বেশি। ১৪ মে থেকে এ দুই উপজেলার সব ইউনিয়নের মানুষ কমবেশি পানিবন্দী। ছাতক উপজেলার উত্তরের ইউনিয়নগুলোয় পানি কিছুটা কমেছে। তবে বেড়েছে দক্ষিণের ভাতগাঁও, জাউয়াবাজার, গোবিন্দগঞ্জ, সৈদেরগাঁও ও সিংচাপইড় ইউনিয়নে।
অন্যদিকে, সুনামগঞ্জ ও পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় এখনো পানি আছে। শহরের উত্তরে সুরমা নদী এবং দক্ষিণে দেখার হাওরের তীরবর্তী এলাকাগুলোয় পানি রয়েছে। বড়পাড়া, মল্লিকপুর, ওয়েজখালী, শান্তিবাগ, পশ্চিম নতুনপাড়া, কালীপুর, হাসনবসত, পশ্চিম হাজীপাড়া, হাসননগর ও সুলতানপুর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। হাসননগর ও সুলতানপুর এলাকার ৬৬টি পরিবার সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে আশ্রয় নিয়েছে। একইভাবে মল্লিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও সেখানকার কিছু পরিবার রয়েছে। এছাড়াও সদর উপজেলার উত্তরের জনপদ সুরমা ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন বন্যায় বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও কুরবান, মোল্লাপাড়া, মোহনপুর ও গৌরারং ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদার নেতৃত্বে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছেন। তিনি আরো জানান, গত রোববার তাঁর নেতৃত্বে মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের বেতগঞ্জ বাজারে আশ্রয় নেয়া ৫০টি পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন। এ সময় জেলা যুবলীগ নেতা নূরুল ইসলাম বজলু ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সলিম উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। কেয়া অরো জানান, বন্যার শুরু থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার একশত পরিবারকে ১ কেজি করে চাল এবং ৫শত পরিবারকে শুকনা খাবার দেয়া হয়েছে।জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যাকবলিত মানুষের সহায়তায় ১৬৫ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ২০টি। এতে প্রায় ৩০০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা জানান, গত কয়েক দিনের অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জগন্নাথপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত দু’দিনে উপজেলার ৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। গত রোববার সন্ধ্যার পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা পরিস্থিতি বিষয়ে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব, জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাফরোজ ইসলাম, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদুল ইসলাম বকুল, আশারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব খান, কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রফি মিয়া, পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আঙ্গুর মিয়া, ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া, কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার, প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা খালেদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ। সভায় জানানো হয় বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। অধিকাংশ লোকজন আত্মীয়-স্বজনদের উঁচু বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। ৪টি বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে ৫০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।জগন্নাথপুরের ইউএনও বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সভা করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সরকারিভাবে ৪৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।