সিলেট বিজিবি বিএসএফ’র সীমান্ত সম্মেলন সম্পন্ন সীমান্ত হত্যা ও মাদক পাচার  বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে ঐকমত

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সীমান্ত হত্যা ও মাদক পাচার বন্ধে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সম্মিলিত জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে ঐকমতের মধ্যদিয়ে গত বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)’র সীমান্ত সম্মেলন। বিজিবি’র রিজিয়ন কমান্ডার এবং বিএসএফ’র ফ্রন্টিয়ার ইন্সপেক্টর জেনারেল পর্যায়ের ৪ দিনের এই সীমান্ত সম্মেলন গত সোমবার সিলেটে শুরু হয়।সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে উভয় বাহিনী। পাশাপাশি অবৈধ অনুপ্রবেশ, মাদক ও চোরাচালানরোধসহ অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যা সমাধানে দুই বাহিনী পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এক হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সম্মেলন শেষে বৃহস্পতিবার বিজিবি ও বিএসএফ’র পক্ষ থেকে এই প্রতিশ্রুতির কথা গণমাধ্যমকে জানানো হয়।সম্মেলনে বিজিবির ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন রিজিয়ন কমান্ডার (সরাইল, চট্রগ্রাম, কক্সবাজার রিজিয়ন এবং ময়মনসিংহ সেক্টর) তানভীর গনি চৌধুরী। বিএসএফ’র ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আইজি (মেঘালয়, মিজোরাম ও কাছাড় এবং ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ার) সুমিত শরণ।

সম্মেলনে বিজিবি কর্মকর্তারা সীমান্ত হত্যা, বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিকদের হামলা, মাদক পাচার, ভারতীয় নাগরিকদের অনুপ্রবেশ, নারী ও শিশু পাচার, ভারত দিয়ে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের অনুপ্রবেশ এবং সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বিএসএফকে অনুরোধ জানান। এছাড়া কসবা রেলওয়ে লিংক প্রজেক্টের কাজ পুনরায় শুরু ও যৌথ নদী কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বাংলাদেশ অংশের নদী শাসন সংক্রান্ত কাজে বিএসএফ’র বাধা অপসারণসহ দীর্ঘদিনের অনিষ্পন্ন বিভিন্ন সমস্যার কথা বিজিবির পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়।বিজিবির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সীমান্ত হত্যা ও মাদক পাচার বন্ধে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সম্মিলিত জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করে বিএসএফ। এছাড়া ভারতীয় নাগরিকদের অনুপ্রবেশ বন্ধে উভয় বাহিনী নিজ নিজ দেশের আইন অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সম্মেলনে বিএসএফও তাদের পক্ষ থেকে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরে। এরমধ্যে ছিল-বাংলাদেশি নাগরিকদের অনুপ্রবেশ এবং বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিকদের ওপর হামলা, মাদক, গরু ও বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ। এছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ এবং বিভিন্ন সীমান্ত স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়নমূলক কাজের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার বিষয়টি তুলে ধরে বিএসএফ।জবাবে বিজিবি সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতে কোনো বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ করলে তার বিরুদ্ধে বিদ্যমান সীমান্ত আইন ও নিজ নিজ দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানায়। এছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া বা স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া, বিদ্যমান বিধিবিধান ও বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত নকশা অনুসরণ করে প্রস্তাবনা প্রেরণের ওপর বিজিবি গুরুত্বারোপ করে। এছাড়া মাদক পাচার ও চোরাচালানরোধে উভয় বাহিনী একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয় বিজিবি।

You might also like