সিলেট স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু সিলেটে কমপক্ষে আরও তিনটি মাঠের প্রয়োজন —— পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট ব্যুরো: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি বলেছেন, সিলেটে খেলার মাঠ বেশী নেই।এখানে কমপক্ষে আরও তিনটি মাঠের প্রয়োজন। সিটি মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে এ ব্যাপারে আলাপ করেছি, যেন মাঠ তৈরির উদ্যোগ নেয়া যায়। তিনি বলেন, সিলেট একটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। এখানে শুধু খেলাধুলার জন্যই নয়, বরং ভূমিকম্পকালে লোকজন যেন খোলা জায়গায় যেতে পারে, এজন্যও মাঠের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।মন্ত্রী গত রোববার বিকেলে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ বালক (অনুর্ধ্ব-১৭) ফুটবল টুর্নামেন্ট ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ বালিকা (অনুর্ধ্ব-১৭) ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরো বলেন, ঐতিহাসিক সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে একসময় বক্তব্য দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকেই। এই স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টটি শুরু হওয়ায় আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়।
সিলেট জেলা স্টেডিয়ামসহ সিলেটের ক্রীড়াঙ্গণের উন্নয়নে সাবেক অর্থমন্ত্রী সদ্যপ্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিতের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিলেট জেলা স্টেডিয়ামসহ সিলেটের ক্রীড়াঙ্গণের উন্নয়নে আমার বড় ভাই সদ্যপ্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অনেক কাজ করেছেন। আজকের এই বিশেষ দিনে সদ্যপ্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতসহ ৭৫’ এর ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা জানাই।তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের প্রায় এক লাখ ১১ হাজার ফুটবলার প্রতিবছর এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। আমাদের ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছাতেই কেবল এটি সম্ভব হয়েছে। ক্রীড়ার উন্নয়নে শেখ হাসিনার সরকারের-এমন ধারা আরো অব্যাহত থাকবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, সিলেটের ডিআইজি মফিজুর রহমান পিপিএম।যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল তার বক্তব্যে বলেন, দেশের ক্রীড়াঙ্গণের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট হচ্ছে এই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ বালক (অনুর্ধ্ব-১৭) ফুটবল টুর্নামেন্ট ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ বালিকা (অনুর্ধ্ব-১৭) ফুটবল টুর্নামেন্ট।তিনি জানান, ২০১৯ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ের এই টুর্নামেন্ট থেকে বাছাইকৃত ৪ জন খেলোয়াড়কে ব্রাজিলে পাঠিয়েছিলাম। পরবর্তীতে আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে, ৪ জন নয়, এখন থেকে এই টুর্নামেন্ট থেকে বাছাইকৃত ১৩ জন প্লেয়ারকে প্রতিবছর বিদেশে পাঠাবো।তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়পর্যায়ে ফুটবল প্রতিযোগিতা চালু আছে। এছাড়াও বাফুফে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতারও আয়োজন করে। এতে করে তৃণমূল পর্যায় থেকে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় উঠে আসে। কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে জায়গা দেয়ার মতো কোন সুযোগ থাকে না। সেই দিক বিবেচনায় রেখে আমাদের ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী এই অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ের টুর্নামেন্টটি আয়োজনের নির্দেশনা দেন। যার ফলশ্রুতিতে প্রতিভাবান এই ফুটবলাররা এখানে খেলছে।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালে প্রথম শুরু করি আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় টুর্নামেন্ট। ৮টি ইভেন্টে সেসময় ৬৫টি সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নেয়। প্রতিকূল পরিস্থিতি থাকায় মাঝে ২ বছর আয়োজন করা যায়নি। এ বছর আবারো ১২টি ইভেন্টে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করা হবে। ইতোমধ্যে ১০৫টি বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রেশন করেছে।যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে, ক্রীড়া পরিদপ্তরের সহযোগিতায় এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক মো. নূরে আলম সিদ্দিকী, বাফুফের কার্যনির্বাহী সদস্য, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম। অনুষ্ঠানে সিলেটের ক্রীড়া সংগঠকসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকলেও জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ অনুপস্থিত ছিলেন।উদ্বোধনী দিনে বালকদের বিভাগে মোগলগাঁও ইউনিয়নকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে খাদিমপাড়া ইউনিয়ন। বালিকা বিভাগে জকিগঞ্জ উপজেলাকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে জৈন্তাপুর উপজেলা।

You might also like